ঢাকা, রবিবার, ২১ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

আধা ঘণ্টার গরম বাতাসে শত শত হেক্টর ধান ক্ষেতের ফসল নষ্ট
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া, কোটালীপাড়া এবং কাশিয়ানীতে কৃষকের ফসলি জমির যে দিকে চোখ যায় শুধু ধান আর ধান। দিগন্তের নিচে ধানের সবুজের সমারহে চোখ জুড়িয়ে যায়। ধানের বুকে বাতাস লেগে দোল খেয়ে প্রকৃতি অপরূপ রূপ ধারণ করে। কৃষকেরও তখন ধানের দিকে তাকিয়ে বুক জুড়িয়ে যায়।

ধারদেনা করে নিজ হাতে যত্নে গড়ে তোলা ধানের দিকে তাকিয়ে অনাগত সন্তানের মতো সুখ লাভ করে। অপেক্ষা শুধু কয়েক দিনের মধ্যে ধান কেটে ঘরে তোলার। ঠিক সেই সময় কৃষকের স্বপ্নের বুকে বিষ ঢেলে দিয়েছে গত ৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় বয়ে যাওয়া ঝড়ের সাথে ৩০ মিনিট স্থায়ী গরম হাওয়া।

এক রাতের মধ্যে শত শত হেক্টর জমির ধান সবুজ থেকে সাদা হয়ে গেছে। নষ্ট হয়ে গেছে ধানের শীষ। কৃষি সংশ্লিষ্টরা বলছেন লু হাওয়ার কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। গোপালগঞ্জের অন্তত ১০টি ইউনিয়নে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

গত ৪ এপ্রিল সন্ধ্যার পরে বয়ে যাওয়া ঝড়ের সাথে ৩০ মিনিটের মতো সময় ধরে এসব এলাকায় গরম বাতাস বয়ে যায়। এ গরম বাতাসে ক্ষেতে উঠতি বোরো ধানের শিষে মাত্র ‘দুধ এর মতো পানি’ এসেছে, সেই ধান সব চিটায় পরিণত হয়ে সাদা রঙ ধারণ করেছে। ধানের শীষে হাত দিলে এতে কোনো ধানের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে না। শুধু চিটা আর চিটা। আর এতে জেলার শত শত কৃষকরা কোটি কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।

রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে জেলার ৪টি উপজেলার অন্তত ১০টি ইউনিয়নের উপর দিয়ে গরম হাওয়া বয়ে যায়। আধা ঘণ্টা ধরে চলা এ গরম হাওয়ায় কোটালীপাড়া উপজেলার কান্দি, পিঞ্জুরী, হিরণ ও আমতলী ইউনিয়ন, টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গোপালপুর, ডুমুরিয়া, পাটগাতি ও বর্নি ইউনিয়ন, কাশিয়ানীর রাতইল ইউনিয়ন, সদর উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়নের শত শত হেক্টর জমির বোরো ধান নষ্ট হয়ে গেছে বলে কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে। ধানের এমন ক্ষতি হওয়ায় কৃষকরা শুধু কাদঁছেন। কী করে ধার-দেনার টাকা শোধ করবেন। সন্তানদের নিয়ে সারা বছর কী খাবেন!

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. অরবিন্দু কুমার রায় বলেছেন, গত রবিবার সন্ধ্যায় ঝড়ো হাওয়ার সাথে ৩০ মিনিট বয়ে যাওয়া গরম হাওয়ার কারণে ধানের এ ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা ইতিমধ্যে মাঠে নেমেছেন। ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করে ঊর্ধ্বতন দপ্তরে প্রয়োজনীয় সুপারিশ পাঠানো হবে।

উল্লেখ্য, এ বছর জেলায় ৭৮ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে বলে জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই



এই পাতার আরো খবর