ফরিদপুরের প্রাচীন উপজেলা শহর বোয়ালমারী। স্বাধীনতা-উত্তর বেগবান সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য বোয়ালমারীকে ফরিদপুরের সাংস্কৃতিক রাজধানী বলা হতো। এখান থেকেই জন্ম হয়েছিল অমল বোস, সাজ্জাদ আলম, পরিচিত রহমানের মতো শক্তিশালী চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অভিনেতা, ঢাকার প্রথম শ্রেণির আবৃত্তি সংগঠন 'মুক্তধারা'র প্রতিষ্ঠাতা, বাচিকশিল্পী রফিকুল ইসলাম শাওন, চলচ্চিত্র ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত কণ্ঠশিল্পী প্রীতিরঞ্জন রায় এ উপজেলার মাটিতেই জন্ম নিয়েছে। জীবন কৃষ্ণ পাল, গাজী শামসুজ্জান খোকন, জয় প্রকাশ দে'র মতো সংগঠক ও গর্ব করার মতো অসংখ্য শিল্পীর আতুর ঘরে বোয়ালমারী সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বেশ কয়েক বছর স্থবিরতা নেমে এসেছিল। দীর্ঘদিন তেমন কোন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড চোখে পড়েনি। এমন স্থবির সময়ে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক ত্যাগী শিল্পীদের নিয়ে শিল্পকলা একাডেমির পূর্ণাঙ্গ কমিটি হওয়ায় আশার আলো দেখছেন অনেকেই।
সাংস্কৃতিক সংগঠক, বোয়ালমারী সাংস্কৃতিক ঐক্যমঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কবি, নাট্যকার, গাজী শামসুজ্জান খোকন বলেন - সুষ্ঠধারার সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড না থাকায় যখন অপসংস্কৃতি বোয়ালমারীকে গ্রাস করছিল ঠিক সেই সময় যাদের নিয়ে সুষ্ঠধারার সাংস্কৃতিক চর্চা করেছি তাদের নিয়ে একটি প্রাণবন্ত কমিটি করায় আমি সবচেয়ে বেশি খুশি। এ কমিটি আবার সুষ্ঠু ধারার সাংস্কৃতিক চর্চা বেগবান করবে এ ব্যাপারে আমি শতভাগ নিশ্চিত।
প্রবীণ সাংস্কৃতিক কর্মী ও আঞ্চলিক ইতিহাস সংগ্রাহক অসীত ভট্টাচার্য পিরু ঠাকুর বলেন, জীবন পাল, নাসরিন সাজ্জাদ(গীতাসুর), আমীর চারু বাবলু, সুমন খান এর মতো প্রতিভাবান, উদার শিল্পী, দক্ষ সাংস্কৃতিক সংগঠক আমি বোয়ালমারীতে দেখিনি। কমিটিতে তাদের স্থান দেওয়ায় শিশু কিশোরদের মেধাবিকাশ বেগবান হবে বলে আমি আশাবাদী। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে এমন একটি কমিটি উপহার দেওয়ায় তাদের ধন্যবাদ জানাই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ জানান, আমি বোয়ালমারীতে দায়িত্ব গ্রহণের পর বৈশ্বিক মহামারি করোনা ও নানাবিধ কারণে বোয়ালমারী সাংস্কৃতিক চর্চায় কিছুটা স্থবিরতা লক্ষ্য করি, জানতে পারি শিল্পকলা একাডেমীর নিজস্ব কোন ভবনও নেই। আমি উদ্যোগ নিয়ে অতীতে যারা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করেছে তাদের দিয়ে শিল্পকলায় নতুন করে ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা করি। সংসদ সদস্য মনজুর হোসেন, উপজেলা চেয়ারম্যান এম এম মোশাররফ হোসেন ও দীর্ঘদিন নিঃস্বার্থ ভাবে যারা শিল্পকলার সাথে কাজ করছে তাদের ও শিল্পানুরাগীদের নিয়ে শিল্পকলা একাডেমীর একটি ভবন নির্মাণে উদ্যোগ নেই, বর্তমানে নির্মাণাধীন ভবনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়। শিল্পকলায় যারা নিঃস্বার্থ ভাবে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাদের নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন