ঢাকা, রবিবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

দালালদের দৌরাত্ম্যে হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারি বন্ধের উপক্রম!
দিনাজপুর প্রতিনিধি
বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

অলিগলিতেও বেসরকারি হাসপাতাল আর ক্লিনিকে ছেয়ে গেছে। আর এসব ক্লিনিক ও হাসপাতালে রোগী আনার জন্যে সরকারি হাসপাতালের সামনে অবস্থান করছে কতিপয় দালাল চক্র। এসব দালালের কারণে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নরমাল ডেলিভারি রোগী আসার সংখ্যা আগের চেয়ে কমে গেছে।

চিকিৎসা সেবা নিতে আসার পথে রোগীর আত্মীয় সেজে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ভুল বুঝিয়ে রোগীকে নিয়ে যায় বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে। এ কাজে নিয়োজিত রয়েছে একাধিক দালাল চক্র। এ অবস্থা বীরগঞ্জ উপজেলা হাসপাতাল ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলা হাসপাতালে। এইসব দালালদের দৌরাত্ম্যে সরকারি হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারি বন্ধের উপক্রম হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এসব ক্লিনিক এবং হাসপাতালে সেবার পরিবর্তে শুরু হয়েছে প্রসূতি সিজারের নামে এক ধরনের ব্যবসা। অর্থের লোভে তাদের হয়ে কাজ করছে এ দালাল চক্র। আবার গ্রামাঞ্চলে কিছু অদক্ষ, প্রশিক্ষণবিহীন ধাত্রী যারা স্থানীয়ভাবে দাই মা বলে পরিচিত। এই দায় মার কারণেও প্রসূতি মায়েদের মৃত্যু ঘটছে। এমন অনেক ঘটনার নজির রয়েছে এলাকায়। ইতিপূর্বে ক্লিনিকে প্রসূতি ও শিশু মৃত্যুকে কেন্দ্র করে কয়েকবার সংঘর্ষ ও সড়ক অবরোধের ঘটনাও ঘটেছে।

অথচ সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা বিনা খরচে রোগীর সব সেবা দেয়। ডেলিভারি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সাথে সাথে রোগীর পরীক্ষার পর সব কিছু স্বাভাবিক থাকলে নরমাল ডেলিভারি করার জন্য চেষ্টা অব্যাহত থাকে। প্রয়োজন না হলে সিজারের পরামর্শ প্রদান করেন না।

২০১৭ সালে একদিনে ২৭টি নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে সন্তান প্রসবে সফলতা ও সুনাম অর্জন করেছিল বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। চিকিৎসকদের এই মহতি উদ্যোগ ভেস্তে যেতে বসেছে দালালদের দৌরাত্ম্যের কারণে। সিজারের নামে বাণিজ্য, দালাল চক্র এবং অদক্ষ ধাত্রীর হাত থেকে প্রসূতি মায়েদের রক্ষায় এবং নিরাপদে নরমাল ডেলিভারি করাতে প্রশাসনের আশু এবং কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন বলছেন স্থানীয়রা।

এ ব্যাপারে বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আফরোজ সুলতানা লুনা জানান, এ হাসপাতালে ডেলিভারি নিরাপদ করতে পাঁচজন দক্ষ মিডওয়েফ রয়েছেন। কারণ হাসপাতালে নিরাপদে ডেলিভারি করানো হলে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে না। সিজারের মাধ্যমে সন্তান প্রসবে শিশুসহ প্রসূতি মৃত্যুর ঝুঁকি থাকতে পারে। একজন প্রসূতি একাধিকবার সিজারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করলে তার মৃত্যু ঝুঁকির পাশাপাশি শারীরিক জটিলতা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে নরমাল ডেলিভারিতে মানুষের অর্থ সাশ্রয় হয়। পাশাপাশি স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত ও নিরাপদ হয়।

বিডি প্রতিদিন/এমআই



এই পাতার আরো খবর