ঢাকা, বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

খানসামায় মাদ্রাজি জাতের ওলকচু চাষ
রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর
খানসামায় মাদ্রাজি জাতের ওলকচু চাষ।

বাড়ির আশপাশে প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা স্থানীয় জাতের ওলকচু চাষ করে আসছেন অনেক কৃষক। আবার অনেকে উন্নত জাত ও ফলনের জন্য ওলকচু চাষ করছেন। কিন্তু প্রথমবারের মতো দিনাজপুরের খানসামায় পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এবং অনেক রোগ নিরাময় করে এমন লাভজনক ও উন্নত মাদ্রাজি জাতের ওলকচু চাষ হচ্ছে। আগামী ২-৩ মাসের মধ্যে ওলকচু সংগ্রহ ও বাজারে উঠবে বলে কৃষকরা জানায়।

খাবারের পরিবর্তনের কারণে এখন মানুষের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কচু জাতীয় ফসলের সংযোজন ঘটাতে এবং নিরাপদ ফসল উৎপাদন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ও কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় খানসামায় মাদ্রাজি জাতের ওলকচু চাষ হয়েছে। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাদ্রাজি জাতের ওলকচু চাষ বিষয়ে কৃষকের কাছে প্রয়োজনীয় তথ্য তুলে ধরেন। এতে উদ্বুদ্ধ হয়ে এবছর খানসামা উপজেলার ১২ জন কৃষক মোট ২৪০ শতক জমিতে ওলকচু চাষ করেছেন।

খানসামার ভাবকী গ্রামের কৃষক ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোজাম্মেল হক বলেন, আগে তো বাড়ির আশপাশে দেশি জাতের ওলকচু চাষ করতাম। এবার মাদ্রাজি জাতের ওলকচু লাগিয়েছি। মাদ্রাজি ওলের ফলন ও গুণাগুন বিষয়ে জানতে পেরে কৃষি অফিস থেকে বীজ সংগ্রহ করেছি। ২০ শতক জমিতে চাষ, নিড়ানি ও অন্যান্য বাবদ এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৬ হাজার টাকা। ফসল তোলা পর্যন্ত আরও কিছু খরচ হবে। আশা করি আগামী ২-৩ মাসের মধ্যে ওলকচু সংগ্রহ করা যাবে। একই কথা বলেন, ভেড়ভেড়ি ইউপির ভেড়ভেড়ি গ্রামের সবুজ রায়।

এ ব্যাপারে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা এম জি এইচ কামরুজ্জামান বলেন, কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের বীজ ও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে এবং যেকোনো প্রয়োজনে তাদের পরামর্শ দিচ্ছি।

খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. নুর ফারিহা আইরিন বলেন, পুষ্টিগুণের দিক থেকে ওলকচুতে কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট, প্রোটিন, থায়ামিন, লোহা, আঁশ, নিকোটিনিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়া ও ভিটামিন রয়েছে। তাই ওলকচু খেলে পেটের পীড়া, ফোঁড়া, হাঁপানি, গোদ, অর্শ বাত, রক্তের ব্যাধি, প্লীহার স্ফীতি প্রভৃতি নিরাময় হয়। আর গাছের উপরের অংশ কানের ব্যথা, গলা ফোলা, ফুসকুড়ি, কলেরা, উদরাময়, পোকামাকড়ে কামড় ইত্যাদি অসুখ সারাতেও ব্যবহার হয়।

খানসামা উপজেলা কৃষি অফিসার বাসুদেব রায় জানান, ওল একটি লাভজনক কন্দ জাতীয় সবজি। দেশের বিভিন্ন এলাকায় উন্নত জাতের ওলকচু চাষ করে অনেকে ভাগ্য বদলেছেন। আশা করি খানসামা উপজেলার কৃষকরা ভালো ফলন এবং ভালো বাজার মূল্য পাবেন। লাভবান হবেন। এটার চাষ আরও বাড়বে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই



এই পাতার আরো খবর