ঢাকা, বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

শখের কবুতর পালন করে লাভবান শিক্ষক আলতাফুর
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
শখের কবুতর পালন করে লাভবান শিক্ষক আলতাফুর।

এক ঝাক কবুতরের বাকবাকুম ডাকে মুখরিত পরিবেশ। নানা রঙের কবুতর উড়ে বেড়াচ্ছে বাড়িতে ও এলাকায়। মনোমুগ্ধকর পরিবেশ দেখতে সারাদিন অনেক মানুষ ভিড় করছেন-এমন পরিবেশ দেখতে পাওয়া যায় ঠাকুরগাঁওয়ের শিক্ষক আলতাফুর রহমানের বাসায়।

করোনাকালীন সময় শিক্ষকতার পাশাপাশি কবুতর লালন-পালন করে এলাকায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি। বাড়ির ছাদ আর খোলামেলা পরিবেশে না রঙের বিভিন্ন জাতের কবুতর ভোর হলেই ডানা মেলে উড়ে বেড়াচ্ছে। দিন দিন পালিত কবুতরের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় সেই কবুতর বিক্রয় করে লাভবান হচ্ছেন শিক্ষক।

করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অবসর সময়টাকে কাজে লাগান ঠাকুরগাঁও সদরের সালন্দর মাদ্রাসার শিক্ষক আলতাফুর রহমান। সখের বসে ২০২০ সালের মার্চ মাসে মাত্র ৩০-৩৫টি কবুতর ক্রয় করে বাড়ির ছাদে লালন-পালন শুরু করেন। বদ্ধ ঘরে কবুতর লালন-পালনে নিজের কাছে অনেকটা অপরাধী মনে হলে ছেড়ে দেন খোলামেলা পরিবেশে।

পরে তার পালিত কবুতরগুলো প্রতিমাসে ডিম থেকে বাচ্চা দিতে শুরু করে। এতে কয়েক মাসেই শতাধিক কবুতর যোগ হয়। শুরুতে পরিবারের পক্ষ থেকে কবুতর পালনে অনীহা প্রকাশ করলেও কবুতরের বংশ বৃদ্ধিতে আগ্রহ বাড়ে সবার। রক্ষণাবেক্ষণে ছাদে পরিধি বাড়িয়ে বাজার থেকে ক্রয় করেন বিভিন্ন জাতের আরো বেশকয়েক জোড়া কবুতর। 

এখন দিন পার হলেই বাড়ছে কবুতর। কবুতরের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাত শতাধিক। পালিত কবুতরগুলোর মধ্যে রয়েছে গিরিবাজ, হোমার, ঘিয়া চন্দন, কালদন, শো কিং, কোকা ও মুক্ষিসহ আরো কয়েকটি জাত। বর্তমানে এসব কবুতর ভোরের আলো ফোটার আগেই ঘর থেকে বেড়িয়ে আশপাশে বাড়ির ছাদ আর খোলা আকাশে উড়ে বড় হচ্ছে।

শিক্ষক ও পরিবারের লোকজন সময়মতো খাবার দিলেই ছুটে আসে একই ছাদে। ভয়ভীতি ছাড়াই উড়ে গিয়ে কখনো শরীরে, কখনো হাত পেতে দেওয়া খাবারে যোগ দেয়। এক ঝাঁক কবুতরের বাকবাকুম শব্দ আর খুনসুটি দেখতে আশপাশের অনেকে হাজির হন শিক্ষকের ছাদে। মনোরম পরিবেশে সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় এক জোড়া কবুতর এখন বিক্রি করছেন ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত। কবুতর লালন-পালনে বাড়তি আয় যোগ হয়েছে পরিবারে।

স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, ভাল পরিবেশ থাকলে কবুতর লালন-পালন করে উদ্যোক্তরা অল্প সময়ে লাভবান হতে পারেন। আর এখন তো কোলাহলপূর্ণ শহরে পাখিদের তেমন দেখাই পাওয়া যায় না। সেখানে একঝাক কবুতরের এমন বাকবাকুম ডাক আমাদের মনে দোলা দিয়ে যায়।

শিক্ষক আলতাফুর রহমান জানান, কবুতর পালনে যেমন মানসিক প্রাশান্তি রয়েছে, তেমনি অল্প সময়ে অনেক টাকা আয় করা সম্ভব। তবে সময়মতো প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের পরামর্শ নিয়ে কবুতর লালন-পালন করলে ঝুঁকি নেই।    ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মামুন অর রশিদ জানান, কবুতর পালন করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার পাশাপশি মাংসের চাহিদা ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ভূমিকা রাখছেন তিনি। প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর থেকে তাকে সব সময় পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। সদরে ২৫-৩০ জন কবুতর লালন-পালন করলেও জেলার শীর্ষে রয়েছেন শিক্ষক আলতাফুর রহমান।

বিডি প্রতিদিন/এমআই



এই পাতার আরো খবর