ঢাকা, বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

টয়লেটে যুবকের লাশ, আড়াই মাস পর হত্যার রহস্য উদঘাটন
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
পুলিশের হাতে গ্রেফতার ব্যক্তিরা।

হত্যার আড়াই মাস পর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সিরাজগঞ্জের তাড়াশের আব্দুল মতিন নামে এক যুবকের হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে। একই সাথে হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। মতিনের ব্যবসা ভাল হওয়ায় ক্ষুদ্ধ হয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে গ্রেফতার আসামিরা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন-সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার তালম পান্ডুরা পাড়া গ্রামের আমিরুল ইসলামের ছেলে আরিফুল ইসলাম (৩১) ও একই উপজেলার গুল্টা মিশনপাড়া এলাকার মৃত বাবুলাল তির্কীর ছেলে শ্রী নিরাঞ্জন তির্কী। রবিবার সকালে সিরাজগঞ্জ পিবিআই কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গত ১৬ জুন তাড়াশ উপজেলার গুল্টা বাজার দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের টয়লেট থেকে গুল্টা পদ্মপাড়া গ্রামের ফজলার রহমানের ছেলে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি আব্দুল মতিনের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আব্দুল মতিনের ভাই মোতালেব বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি দিয়ে তাড়াশ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। এরপর গত ১৯ জুন পিবিআই মামলার দায়িত্ব গ্রহণ করে। পিবিআইয়ের এসআই আব্দুল খালেক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ২৫ আগস্ট চারজনকে আটক করেন। এর মধ্যে আসামি আরিফুল ইসাম ও নিরাঞ্জন তির্কী হত্যার দায় স্বীকার করেন।

আসামিদের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার জানান, হত্যাকাণ্ডের শিকার আব্দুল মতিন ও আসামি আরিফুল ইসলাম দুজনের গুল্টা বাজারে ইলেক্ট্রনিক্সের দোকান আছে। কিন্তু আসামি আরিফুলের চেয়ে মতিনের দোকানে কাস্টমার বেশি হওয়ায় আরিফুল তার উপর ক্ষুব্ধ হয়। এ কারণে তাকে শায়েস্তা করার সিদ্ধান্ত নেয়। অন্যদিকে নিরাঞ্জন যখন বাড়িতে থাকে না তখন রাতে কে বা কারা তার বউকে উত্যক্ত করে। আরিফ কৌশলে নিরাঞ্জন ও তার বউকে বলে কাজটি আব্দুল মতিন করেছে। এজন্য দুজনই ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৬ জুন রাত ১টার দিকে মতিন দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফেরার পথে আরিফুল ও নিরাঞ্জনসহ অন্যান্য আসামিরা তার গতিরোধ করে। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে মতিন এবং আরিফ একে অপরের গলা চেপে ধরলে অন্যান্য আসামিরা আরিফুলকে বাচাঁতে মতিনের হাত ছাড়িয়ে নেন। তারপর আরিফুলের সহযোগী নিরাঞ্জনের সহায়তায় মতিনকে মাটিতে ফেলে ঘাড় মটকে দেয়।

এসময় অন্য আসামিরা মতিনের হাত পা মাটিতে চেপে ধরে, যাতে সে নড়তে না পারে। কিছুক্ষণ পরে আব্দুল মতিন নিস্তেজ হয়ে পড়ে। আসামিরা মৃত মতিনকে নিয়ে প্রথমে নিরাঞ্জনের বাড়িতে ১০-১৫ মিনিট রাখার পর মৃতদেহটি আরিফ, নিরাঞ্জন ও অন্যান্য সহযোগীরা গুল্টা বাজার সংলগ্ন দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের টয়লেটে ফেলে দেয় বলে জানান পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম।

বিডি প্রতিদিন/এমআই



এই পাতার আরো খবর