ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, পানিবন্দী মানুষ
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :

ক্রমাগতভাবে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে কুড়িগ্রামে ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারী পয়েন্টে ৩৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মঙ্গলবার দুপুরে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড এ তথ্য জানায়। তবে তিস্তা ও দুধকুমার নদীর পানি কিছুটা কমেছে। এর ফলে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে।

এ অবস্থায় নদ-নদীর তীরের নিম্নাঞ্চলসমূহের প্রায় দুই শতাধিক চর ও দ্বীপচরের ৫০হাজার পানিবন্দী মানুষ রয়েছেন বিপাকে। এসব অঞ্চলে দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানি সংকট। নৌকা দেখলেই এখানকার মানুষজন ত্রাণের আশায় ছুটে আসেন। সদর উপজেলার সঙ্গে পাঁচগাছী ইউনিয়নের একমাত্র পাঁচগাছী-জালালের মোড়-মোল্লারহাট সড়কটির কয়েকটি অংশ বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। এতে এই ইউনিয়নের সঙ্গে জেলা শহরের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। 

উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের দাগাড়কুটি চরের বাসিন্দা শিউলি বেগম জানান, আমার ঘরে এক বুক পানি। কোনমতে চৌকির ওপর মাঁচা বানিয়ে ওখানেই খাওয়া রান্না ও শোয়ার কাজ করতেছি প্রায় ৬দিন থেকে। আমাদের মহিলাদের টয়লেট করার কোন উপায় নেই। 

একই এলাকার শামছুল, বকিয়ত ও নবিজন বেওয়া জানান, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি এতটা বেড়েছে যে ঘরেই থাকতে পারছি না। ফলে উঁচু বাঁধে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছি। কিন্তু খাব কী? ঘরে চাল চুলো কিছুই নেই। কেউ কোন সাহায্যও দেয়নি। 

এদিকে, এসব এলাকায় গ্রামীণ সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। বাড়িঘরে পানি উঠায় নৌকাই তাদের একমাত্র ভরসা।এছাড়াও গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে তিস্তা, দুধকুমার ও ধরলা নদীর উজানের দিকে দেড় শতাধিক বাড়িঘর ও ফসলী জমি নদীগর্ভে চলে গেছে।অনেকে বন্যার পাশাপাশি ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। 

উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন জানান, আমার ইউনিয়নে প্রায় ৮ থেকে ১০ হাজার মানুষ এখন পানিবন্দী।এখনও উপজেলায় বরাদ্দ আসলেও তা হাতে না পাওয়ায় এসব মানুষকে ত্রাণ সহায়তা দেয়া সম্ভব হয়নি। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল হক জানান, চলতি বন্যায় জেলায় প্রায় ১৬ হাজার ৪শ ৭ হেক্টর জমির রোপা আমান ও ২শ ৭০ হেক্টর জমির সবজি খেত ও ১শ হেক্টর জমির বীজতলা প্রায় এক সপ্তাহ ধরে পানিতে তলিয়ে থাকায় বেশিরভাগই নষ্ট হয়ে গেছে। 

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, বন্যাকবলিত ও ভাঙন কবলিতদের জন্য ইতোমধ্যেই ২৮০ মেট্রিকটন চাল ও সাড়ে ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে তা দেয়া হচ্ছে।

বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ



এই পাতার আরো খবর