ঢাকা, শুক্রবার, ১ নভেম্বর, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

মুক্তি পেয়েছেন ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ আওয়ামী লীগের ১২ নেতাকর্মী
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরের আলোচিত ঘটনায় ইউএনও ও পুলিশের মামলায় দ্বিতীয় দফায় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন আওয়ামী লীগের ১২ নেতাকর্মী। 

বৃহস্পতিবার বিকেল ৪ টা ৫০ মিনিটে বরিশাল কেন্দ্রিয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তারা। কারাফটকে তাদের স্বাগত জানান মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর এবং সহসভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু ও গাজী নাঈমুল হোসেন লিটুসহ দলীয় কিছু নেতাকর্মী। 

এর আগে আসামি পক্ষের জামিন আবেদনের শুনানী শেষে বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে দুই মামলায় তাদের জামিন মঞ্জুর করেন বরিশালের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. মাসুম বিল্লাহ। 

আদালত চত্ত্বরে দুপুরে আসামি পক্ষের আইনজীবী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস গণমাধ্যমকে বলেন, আদালত পৃথক মামলায় পুলিশ প্রতিবেদন জমা দেয়ার আগ পর্যন্ত জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি গোলাম মাসউদ বাবলু ও (আসামি পক্ষের আইনজীবী) সাবেক সভাপতি তালুকদার মো. ইউনুসের জিন্মায় ১০ হাজার টাকার বন্ডে ১২ আসামির জামিন মঞ্জুর করেন। আদালতের আদেশে সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। 

ইউএনও’র মামলায় দ্বিতীয় দফায় মুক্তিপ্রাপ্তরা হলো মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক হাসান মাহমুদ বাবু, মো. অলিউল্লাহ, মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন ফিরোজ, লিটন ঘোষ, রাকিবুল ইসলাম রাকিব, শুভ হাওলাদার, শুভ সাহা, সদর উপজেলার কড়াপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ শাহরয়ার বাবু, শাহিনুর ইসলাম শাহিন ও হারুনর রশিদ। 

একইভাবে পুলিশের মামলায় এই ১০ জন ছাড়াও মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নগরীর ২১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ সাইয়্যেদ আহমেদ মান্না এবং মিরাজ গাজী নামে দুইজন কারা মুক্তি পেয়েছেন। 

দুই মামলায় কারাভোগের পর নেতাকর্মীরা মুক্তি পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর। তবে নেতাকর্মীরা অন্যায়ভাবে জেল খেটেছে কিনা কিংবা চিকিৎসাধীন অবস্থায় গ্রেফতার অপর দুইজন নেতাকর্মীর জামিনের বিষয়ে গণমাধ্যমের প্রশ্নে সরাসরি কোন উত্তর দেননি তিনি। 

এর আগে একই আদালতের আদেশে গত ২৫ আগস্ট এই দুই মামলায় প্রথম দফায় আওয়ামী লীগের আরও ৯ জন নেতাকর্মী কারাগার থেকে মুক্তি পান।    গত ১৮ আগস্ট রাতে বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরের অনাকাংখিত ঘটনায় পরদিন ইউএনও এবং পুলিশ বাদী হয়ে সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহসহ আওয়ামী লীগের ৬০২ জন নেতাকমীর বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন কোতয়ালী মডেল থানায়। দুই মামলায় পুলিশ এ পর্যন্ত ২৩ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে। 

তাদের মধ্যে চোখে গুলিবিদ্ধ তানভীর হাসান এবং মনিরুজ্জামান মনির নামে দুই আসামি গ্রেফতার অবস্থায় ঢাকার জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ওই ২ জন বাদে বরিশাল কারাগারে থাকা ২১ আসামির মধ্যে গত ২৫ আগস্ট ৯ জন এবং দ্বিতীয় দফায় আজ আরও ১২জন নেতাকর্মী মুক্তি পেয়েছেন। 

এদিকে, গত ২২ আগস্ট প্যানেল মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকন এবং সিটি করপোরেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা বাবুল হালদার বাদী হয়ে ইউএনও এবং ওসি সহ মোট ১১৪ জনের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন আদালতে। আদালত ওই মামলার অভিযোগ তদন্ত করে ২৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য পিবিআই’কে নির্দেশ দেন। সরকারের উচ্চ মহলের নির্দেশে ওই দিনই রাতে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো. সাইফুল হাসান বাদলের বাসভবনে বিভাগীয় ও জেলা এবং পুলিশ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে সিটি মেয়রসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের এক সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উভয় পক্ষের মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়। 

ওই বৈঠকের সুফল হিসেবে দুই দফায় ২১ জন নেতাকর্মী মুক্তি পেয়েছেন বলে জানান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস। 

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন



এই পাতার আরো খবর