ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

টাঙ্গাইল-৭ আসনে উপ-নির্বাচন : মিটিং-মিছিলে সরগরম নির্বাচনী এলাকা
মো. নাসির উদ্দিন, টাঙ্গাইল
জহিরুল ইসলাম জহির ও খান আহমেদ শুভ।

জাতীয় সংসদের টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনের উপ-নির্বাচনের ভোট গ্রহণ আগামী রবিবার অনুষ্ঠিত হবে। এই আসনে প্রথমবারের মতো ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দেবেন ভোটাররা। উপ-নির্বাচনে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনকে ঘিরে প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা বিরাজ করছে। উপজেলার প্রতিটি প্রান্তর পোস্টারে ছেয়ে গেছে। মিছিল-মিটিংয়ে সরগরম নির্বাচনী এলাকা।

এই উপ-নির্বাচনে মোট পাঁচজন প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। তারা হলেন-আওয়ামী লীগের খান আহমেদ শুভ (নৌকা), জাতীয় পার্টির মো. জহিরুল ইসলাম জহির (লাঙল) বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মো. গোলাম নওজব পাওয়ার চৌধুরী (হাতুড়ি), স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. নুরুল ইসলাম নুরু (মোটর গাড়ি) ও বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির প্রার্থী শ্রী মতি রুপা রায় চৌধুরী (ডাব)।

গত বছরের ১৬ নভেম্বর এই আসনে চারবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য, সড়ক পরিবহন এবং সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. একাব্বর হোসেন মারা যান। এরপর নির্বাচন কমিশন আসনটি শূন্য ঘোষণা করেন।

জানা যায়, একটি পৌরসভা ও ১৪ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত টাঙ্গাইল-৭ মির্জাপুর আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৪০ হাজার ৩৭৯ জন।  এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭০ হাজার ৫০১ এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৬৯ হাজার ৮৭৮ জন। টাঙ্গাইল কটন মিলস উচ্চ বিদ্যালয় (মহিলা কেন্দ্র) গোড়াইয়ে চারজন হিজড়া তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। ১২১টি ভোট কেন্দ্রের ৭৫৬ কক্ষে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে, নির্বাচনে প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা লক্ষ করা গেছে। উপজেলার প্রতিটি প্রান্তর পোস্টারে ছেয়ে গেছে। মিছিল-মিটিংয়ে সরগরম নির্বাচনী এলাকা।

মির্জাপুর নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন স্থানের ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রার্থী পাঁচজন হলেও ভোটের মূল প্রতিযোগিতা হবে আওয়ামী লীগের নৌকা ও জাতীয় পার্টির লাঙলের মধ্যে। প্রচারণার দিক থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী খান আহমেদ শুভ অনেকটা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন। তিনি বয়সে তরুণ। তার বাবা ফজলুর রহমান খান ফারুক মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও একজন ত্যাগী রাজনীতিবিদ। ৭০ ও ৭৩ সালে সংসদ সদস্য ছিলেন। এছাড়া প্রয়াত সংসদ সদস্য একাব্বর হোসেন এলাকায় অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন। এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন তিনি। জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. জহিরুল ইসলাম জহিরও প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য, জেলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি খান আহমেদ শুভ বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছে আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন কর্মী আমি। বাবা ফজলুর রহমান খান ফারুক একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর পরীক্ষিত সৈনিক। শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন।

তিনি বলেন, প্রয়াত এমপি একাব্বর হোসেন মির্জাপুরের অনেক উন্নয়ন করেছেন। তার সেই উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের প্রতিটি নেতাকর্মী আমার জন্য মাঠে কাজ করছেন। ১৬ জানুয়ারির নির্বাচনে এলাকাবাসীর ভোটে আমি জয়ী হতে পারবো ইনশাআল্লাহ। আমি নির্বাচিত হলে মির্জাপুরকে একটি আদর্শ উপজেলা হিসেবে উপহার দিতে চাই। বিশেষ করে এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা ও শিক্ষার উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান বাড়াতে চেষ্টা করবো।

জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও দলীয় প্রার্থী মো. জহিরুল ইসলাম জহির বলেন, দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। উপজেলা জাতীয় পার্টি এবং সাধারণ ভোটাররা আমার সঙ্গে আছেন। পরিবর্তনের জন্য তারা আমাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করবেন।

তিনি বলেন, মির্জাপুরের সন্তান হিসেবে আমি সব সময় এলাকাবাসীর সঙ্গে ছিলাম। ভবিষ্যতে এলাকার সার্বিক উন্নয়ন করতে নিজেকে নিয়োজিত করবো।

মির্জাপুর উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষভাবে ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই



এই পাতার আরো খবর