ঢাকা, রবিবার, ২১ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

অপারেশন ও এক্স-রে হয় না হাকিমপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে
রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর
হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও জনবল সংকটের মধ্যে অত্যাধুনিক ওটি (অপারেশন থিয়েটার) থাকলেও সার্জারি কনসালটেন্ট ও চিকিৎসকের অভাবে অপারেশন বন্ধ রয়েছে। এক বছরের অধিক সময় ধরে এক্স-রে মেশিনও রয়েছে বিকল। এছাড়া আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন না থাকাসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

জেলা শহর থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত হাকিমপুর উপজেলা। হিলি স্থলবন্দর ও উপজেলার লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র ভরসা এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। নেই বেশির ভাগ পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি, ভোগান্তিতে পড়ছে সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ। এ হাসপাতালের অবকাঠামো বাড়লেও রোগীর বেডে লাগেনি আধুনিকতার ছোঁয়া।

রয়েছে চিকিৎসক, কনসালটেন্টসহ চতুর্থ শ্রেণির জনবল সংকট। মায়েদের চিকিৎসায় জরুরিভাবে প্রয়োজন গাইনি কনসালটেন্ট। কনসালটেন্ট’র পাঁচটি পদই ফাঁকা রয়েছে। প্রতিদিন ইনডোর ও আউটডোর মিলে ২০০ থেকে ৩০০ রোগী আসে। এতে হিমশিম পোহাতে হয় কর্তৃপক্ষকে। এমনটাই জানালেন হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শ্যামল কুমার দাস।

এদিকে এক্সরে মেশিন, আল্ট্রাসোনোগ্রাম মেশিন নাই, এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কতিপয় স্থানীয় দালালরা রোগীদের বাইরের ক্লিনিক থেকে আল্ট্রাসনোগ্রাম ও ইসিজি করতে উৎসাহিত করছে। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন রোগীর এক্স-রে করতে সর্বোচ্চ খরচ গুণতে হয় ১০০-১৫০ টাকা। সেটি বাইরে কোনো ক্লিনিকে ৫০০ টাকার উপরে খরচ হয়। আল্ট্রাসনোগ্রামেও সরকারি পরীক্ষার মূল্য ১০০-১৫০ টাকা এবং বাইরে গুণতে হচ্ছে ৫০০ টাকা করে। এছাড়াও উচ্চমূল্যে অপারেশন করতে হচ্ছে বাইরের ক্লিনিকগুলোতে। এতে চরম বিপাকে পড়তে হয় চিকিৎসা নিতে আসা মানুষদের।

চিকিৎসা নিতে আসা স্থানীয় কামরুল বলেন, গরিব মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র ভরসা সরকারি হাসপাতাল। এখানে ওষুধ ছাড়া কিছুই মিলে না। না হয় এক্স-রে, না হয় আল্ট্রাসনোগ্রাম, না হয় অপারেশন।

রফিক নামের আরেকজন বলেন, এখানে অপারেশন না হওয়ায় বাইরে অপারেশন করাতে গেলে দ্বিগুণ খরচ হয়। অথচ এখানে করলে কম টাকা দিয়ে হতো।

হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শ্যামল কুমার দাস বলেন, হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটার আছে। কিন্তু গাইনি ও সার্জারি কনসালটেন্ট না থাকায় অপারেশন প্রক্রিয়া শুরু করতে পারছি না। এ বিষয়ে সিভিল সার্জনের সাথে কথা বলেছি। আশা করছি দ্রুত এটি চালু করা সম্ভব হবে। এক্স-রে মেশিন নষ্ট সেটারও চাহিদা পাঠিয়েছি। আর রেডিওলোজিস্ট না থাকায় বহির্বিভাগে আল্ট্রাসনোগ্রাম চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।

তিনি আরও জানান, ৫০ শয্যায় উন্নীত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৩ জন চিকিৎসকের স্থলে সাতজন চিকিৎসক রয়েছে। কিন্তু কনসালটেন্ট ছয়জনের স্থলে রয়েছে একজন। প্রতিদিন ইনডোর ও আউটডোর মিলে ২০০ থেকে ৩০০ রোগী আসে। জনবল সংকটের বিষয়টি নিয়মিত স্বাস্থ্য বিভাগকে অবগত করা হচ্ছে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই



এই পাতার আরো খবর