ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

ছয় দিনেও খোঁজ মেলেনি মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীর গুলিতে নিখোঁজ বাংলাদেশির
টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
নিখোঁজ মোহাম্মদ ইলিয়াছ।

কক্সবাজারে টেকনাফের নাফ নদীতে মাছ ধরার সময় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) গুলির পর মোহাম্মদ ইলিয়াছ (৫০) নামে বাংলাদেশি এক জেলে নিখোঁজ রয়েছে। ছয়দিনেও তার খোঁজ মেলেনি।

নিখোঁজ জেলে উপজেলার হোয়াইক্যং (বিজিবি তল্লাশি চৌকি) এলাকার বাসিন্দা মৃত ছৈয়দ আহমদ বলির ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হোয়াইক্যং ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ নুর আহমদ আনোয়ারী। গত বুধবার সকালের দিকে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের লম্বাবিল এলাকায় নাফ নদীতে এ ঘটনা ঘটেছিল।

টেকনাফ-২ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার জানান, ঘটনার পর নদী সাঁতরে গুরা মিয়া (৩৫) নামে এক জেলে অক্ষত অবস্থায় ফিরে এলেও মোহাম্মদ ইলিয়াছ নিখোঁজ ছিল। এ দুই জেলে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের বাসিন্দা।

ফিরে আসা জেলে গুরা মিয়া জানান, তারা ওইদিন নাফ নদীতে মাছ ধরার সময় তাদের দুজনের দিকে গুলি ছোড়া হয়। এ সময় দুজনই নৌকা থেকে পানিতে লাফ দেন। তিনি সাঁতরে টেকনাফে চলে আসতে পারলেও মোহাম্মদ ইলিয়াছ নিখোঁজ আছেন।

বিজিবির অধিনায়ক শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার বলেন, এই দুই জেলে বুধবার সকালে নাফ নদীর টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের লম্বাবিল এলাকার জলসীমার শূন্যরেখা অতিক্রম করে মিয়ানমারের অন্তত ১০০ গজ ভেতরে ঢুকে মাছ ধরছিলেন। একপর্যায়ে মিয়ানমারের বিজিপি সদস্যরা তাদের থামার জন্য নির্দেশ দিলে তারা বাংলাদেশের জলসীমার দিকে পালিয়ে আসার চেষ্টা করেন। এসময় দুই জেলেকে লক্ষ্য করে বিজিপি গুলি ছোড়ে। তখন জেলেরা নৌকা থেকে লাফ দেন। গুরা মিয়া অক্ষত অবস্থায় ফিরে এলেও আরেকজন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, নিখোঁজ জেলের ভাগ্যে কী ঘটেছে, বিজিবি এখনো নিশ্চিত নয়। সে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিখোঁজ রয়েছে, নাকি বিজিপির সদস্যরা ধরে নিয়ে গেছেন, তা এখনো জানা যায়নি। ঘটনার পর মিয়ানমারের বিজিপির সঙ্গে যোগাযোগ করে জেলে ফেরত চেয়ে পরেরদিন একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের জবাব বা কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

নিখোঁজ ইলিয়াছের ছেলে মোহাম্মদ তারেক বলেন, ‘দু’জনই মাছ শিকারে যান। একজন প্রাণ নিয়ে ফিরলেও আমার বাবা এখনও ফেরেননি। কেউ বলছে, লাশ নাকি পানিতে ভাসছিল। আর কেউ বলছে, লাশ মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপির) কাছে রয়েছে।’ নিখোঁজ বাবাকে ফিরে পাওয়ার আকুতি জানান তিনি। জীবিত না থাকলে যেন অন্তত লাশটি ফেরত পাওয়ার ব্যবস্থা নেন, এজন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানান।

হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারী বলেন, মিয়ানমারের ওই পাড়ে গত মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে একই এলাকায় ৮-১০ রাউন্ড গুলির শব্দ শুনতে পান স্থানীয় লোকজন। তবে গত শুক্রবার ও শনিবার মিয়ানমার জলসীমার ভেতরে মানুষের মতো দেখতে কিছু একটা ভাসতে দেখেছিলেন বলে তিনি স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে শুনেছেন। এর মধ্যে ছয়দিন অতিবাহিত হলেও নিখোঁজ জেলে মোহাম্মদ ইলিয়াছের কোনো খোঁজ মেলেনি।

বিডি প্রতিদিন/এমআই



এই পাতার আরো খবর