ঢাকা, রবিবার, ২৮ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

পার্কিং সুবিধা না থাকায় ভোলার ইলিশা ফেরিঘাটে দুর্ভোগ
ভোলা প্রতিনিধি
পার্কিং সুবিধা না থাকায় ভোলার ইলিশা ফেরিঘাটে দুর্ভোগ।

ভোলার ইলিশা ফেরিঘাটে পার্কিং সুবিধা না থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যানবাহনের চালক ও পথচারীদের। এছাড়া দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সড়ক। তবে জেলা প্রশাসন বলছেন, টার্মিনালের জন্য বিআইডব্লিউটিএ’র দপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। জায়গা নির্ধারণ করা হলে পার্কিংয়ের জন্য দ্রুত টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে।

প্রায় এক যুগ আগে ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা থেকে মেঘনা নদী পাড়ি দিয়ে লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর হাটে যাতায়াতের জন্য ফেরি চলাচল শুরু হয়। চালু হয় ভোলা-বরিশাল-লক্ষ্মীপুর সড়কে যানবাহন চলাচল। এই সড়ক এখন দেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের ২১ জেলার সহজ যোগাযোগের রুটে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন শতশত যানবাহন যাতায়াত করছে। কিন্তু একযুগ পার হলেও ইলিশা ফেরিঘাটে গড়ে ওঠেনি পার্কিং ব্যবস্থা। নির্মাণ করা হয়নি মানসম্মত একটি টার্মিনাল।

যানবাহনের তুলনায় ফেরির সংখা কম আবার শুষ্ক মৌসুমে নদীতে নাব্য সংকট থাকে। তখন ফেরিতে সিরিয়াল পাওয়ার জন্য দুই তিনদিন ঘাটে অপেক্ষা করতে হয় পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে। পার্কিং সুবিধা না থাকায় ফেরিতে ওঠার জন্য ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, লরিগুলোকে সড়কের একপাশে লাইন দিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখতে হয়। মাঝেমধ্যে দুই-তিন কিলোমিটার দীর্ঘ লাইন পড়ে। সড়কের একপাশ বন্ধ হয়ে যায়। অপর পাশ দিয়ে চলাচল করে যানবাহন। সৃষ্টি হয় যানজট। একপাশে অতিরিক্ত লোড পড়ায় দ্রুত নষ্ট হয়ে যায় সড়ক।

পরিবহন শ্রমিক সেলিম, জাকির, হারনসহ আরও অনেকে জানান, এই রুটটি এত গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার পরও ইলিশা ঘাটে পরিবহণ শ্রমিকদের জন্য কোনো ব্যবস্থা নেই। ঘাটে গাড়ি রাখার মতো কোনো জায়গা নেই। ফলে বাধ্য হয়েই রাস্তার উপরে গাড়ি রাখতে হচ্ছে।

ট্রাক চালক মিজান ক্ষোভের সাথে বলেন, ‘আজ চার দিন আটকে আছি। এখানে নাই পার্কিং প্লেস, নাই বাথরুম, নাই গোসল খানা। আমাগো পরিবহন শ্রমিক গো লইগা কোনো জায়গা হয় না।’

ঘাটের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গির, আবুল কালাম জানান, প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ মালবাহী ট্রাক চলাচল করে। মাত্র তিনটা ফেরি চলে। সব সময়ই একটা না একটা ফেরি বিভিন্ন কারণে বন্ধ থাকে। এখানে  কমপক্ষে ৫টা থেকে ৬টি ফেরি চালু করা উচিত।

ইলিশা লঞ্চ ও ফেরিঘাটের ইজারাদার ইউসুফ পাটোওয়ারী বলেন, ইলিশা ফেরি ও লঞ্চঘাট একটি ব্যস্ততম ঘাট। এ ঘাট থেকে প্রতিদিন ঢাকা-লক্ষ্মীপুরগামী ২০টি লঞ্চ, দুটি সি-ট্রাক, তিনটি ফেরি ছাড়াও অসংখ্য ট্রলার ও স্পিডবোট চলছে। 

ভোলা-লক্ষ্মীপুর ফেরি আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ রায় অপু বলেন, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রথম ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটে ফেরি চলাচল শুরু হয়। ১২ বছরে কয়েক দফা পরিদর্শন করেছে কর্তৃপক্ষ। এসব সমস্যা সমাধানে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়নি। গড়ে ওঠেনি যাত্রী ছাউনি ও আধুনিক বন্দর ব্যবস্থা। ফলে বছরের পর বছর চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বাস-ট্রাক চালক-শ্রমিকসহ যাত্রীদের।

ভোলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সুজিত হাওলাদার জানান, ইলিশা ফেরিঘাটে জমির আইনি জটিলতার কারণে পার্কিং প্লেস হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হবে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই



এই পাতার আরো খবর