ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

গুপ্তধনের লোভ দেখিয়ে সন্তানের সামনে গৃহবধূকে পালাক্রমে ধর্ষণ
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া ইউনিয়নের মধুপুর গুদাম পাড়া এলাকায় এক গৃহবধূ (২৭) তার তিন বছরের শিশু সন্তানের সামনে পালাক্রমে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। গত শুক্রবার গভীর রাতে ওই ইউনিয়নের মিশন রেলগেট কোয়ার্টারে এই ঘটনা ঘটে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ওই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মধুপুর গ্রামের পঞ্জিকা সাধক ও তান্ত্রিক প্রকাশ (ঝোল) ওই নারীকে গুপ্তধনের সন্ধান দেওয়ার লোভ দেখিয়ে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে কৌশলে ওই নারীকে মিশন রেলগেট কোয়ার্টারে নিয়ে আসে। এরপর শিশু ওই গৃহবধূর সন্তানকে পাশে রেখে তান্ত্রিক ঝোল তাকে ধর্ষণ করে। পরে তার বন্ধু রুহিয়া মিশন রেল গেটম্যান সামিম (৩০), এনামুল হক (৩৭), মেজর (২৮) ও উজ্জল দাসকে (৩৫) ডেকে আনলে তারাও ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় ওই গৃহবধূ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে ঘটনাটি তার আত্মীয়-স্বজনকে জানানোর পর শনিবার সকালে রুহিয়া থানায় মামলা করতে গেলে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি মামলা না করার জন্য ভয়ভীতি দেখিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন।

সংরক্ষিত আসনের ইউপি সদস্য (সাবেক) বিনা রাণী জানান, এই গৃহবধূ খুবই গরিব। একই এলাকার সাধক ঝোল তাকে বিভিন্ন লোভ দেখিয়ে মিশন রেল গেটে নিয়ে যায়। পরে গেটম্যানসহ চার যুবক তাকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করতে গেলে বর্তমান ইউপি সদস্য ইউসুফ আলী আমাদের বাঁধা প্রদান করেন। আর সমাধানের জন্য দুই দিন সময় নেন। আজ রবিবার সন্ধ্যায় বসার কথা আছে।  অন্যদিকে, ইউপি সদস্য ইউসুফ আলীর সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনটিও বন্ধ রেখেছেন।

রুহিয়া ঘনিবিষ্ণুপুর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তসলিম উদ্দিন বলেন, ইউসুফ মেম্বার ওই নারীকে মামলা করতে নিষেধ করেন। একই সঙ্গে মুখ বন্ধ রাখার জন্য কিছু টাকা পয়সার প্রস্তাব দেন এবং তার ভাইয়ের বাসায় কয়েকদিন লুকিয়ে থাকার জন্য চাপ দেন। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল হক বাবু জানান, একটি মহিলার রাতে হারিয়ে যাওয়া। আবার পরের দিন সকালে খুঁজে পাওয়ার ঘটনা আমি শুনেছি। কিন্তু ধর্ষণের বিষয়টি আমি জানি না।

তবে এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোছা. সুলতানা রাজিয়া বলেন, শিশু সন্তানের সামনে গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। আমি খোঁজ নিয়ে পুলিশ পাঠাচ্ছি। স্থানীয়ভাবে সমাধানের জন্য ওই গৃহবধূর পরিবারকে চাপ দেওয়া হচ্ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় কোনো সমাধান হয় না। যারা এই জঘন্য কাজ করেছে বা যারা সমাধানের জন্য চাপ দিচ্ছে- তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর



এই পাতার আরো খবর