ঢাকা, বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

দুম্বার খামার করে চমকে দিলেন সাতক্ষীরার সালাম
মনিরুল ইসলাম মনি, সাতক্ষীরা
আব্দুস সালামের দুম্বা খামার

মধ্যপ্রাচ্যের প্রাণী দুম্বার খামার গড়ে আর্থিক স্বচ্ছলতা ও  সাফল্য পেয়েছেন সাতক্ষীরার মৎস্য ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম খোকা। মরু অঞ্চলের প্রাণী দুম্বা পালন করে তিনি রীতিমতো এলাকায় হৈ চৈ ফেলে দিয়েছেন।

গৃহপালিত পশু গরু ও ছাগল এবং ভেড়ার মতই দুম্বা লালন পালন করা সম্ভব। গরু, ছাগল ও ভেড়ার খামারের চাইতে অধিক দুম্বা পালনে লাভ বেশি। 

দুটি দুম্বা দিয়ে সালামের খামারের শুরু। বর্তমানে তার পাঁচটি দুম্বা রয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১০ লক্ষ টাকা। মরু অঞ্চলের এই প্রাণী দেখতে প্রতিদিন শত শত মানুষ সালামের খামারে ভিড় করছেন।

সালাম জানান, ২০১০ সালের দিকে তিনি চুপড়িয়া গ্রামে ৫০ বিঘা জমিতে মাছ চাষের পাশাপাশি গরুর খামার করেন। গরু থেকে দুম্বায় পালনে বেশি লাভ হবে, ইউটিউব দেখে ছেলে তাকে এই পরামর্শ দেয়।এরপরই তিনি দুম্বার খামার করার সিদ্ধান্ত নেন।

২০২১ সালের আগস্ট মাসের দিকে সালাম পাবনার ঈশ্বরদী থেকে ৪ লাখ টাকায় দুইটি দুম্বা কেনেন। সেখান থেকে খামারে এসেছে নতুন অতিথি। বাচ্চাটির মূল্য এখন দেড় লাখ টাকা। এছাড়াও গত দেড় মাস আগে ঢাকার জয়দেবপুর এলাকা থেকে তিন লাখ টাকা দিয়ে আরও দুটি দুম্বা নিয়ে এসেছেন সালাম। তাদের খামারে বর্তমানে দুম্বার সংখ্যা পাঁচটি। 

এখন খামারটি বড় পরিসরে গড়ে তোলার স্বপ্ন তাদের। প্রত্যেকটি দুম্বার পেছনে দৈনিক ৬০ টাকা খরচ হয়। স্বাভাবিক ছাগল-ভেড়া যেসব খাবার খায় দুম্বাও সেখাবারই খাচ্ছে। বাড়তি অথবা ভিন্ন কোন ধরনের খাবার দেওয়ার প্রয়োজন হচ্ছে না। এখনো পর্যন্ত কোন দুম্বা ও রোগাক্রান্ত হয়নি। 

আব্দুস সালাম জানান, প্রাপ্তবয়স্ক মাদি দুম্বা ৮ মাস পর পর একটি কিংবা দুটি ছানা প্রসব করে। বছরে একটি মাদি দুম্বা থেকে দুইটা বাচ্চা পাওয়া যাবে। প্রজননের জন্য একটি পুরুষ দুম্বা ২০টি মাদি দুম্বার সঙ্গী হতে পারে। ঘাস, ভুষি, কলার পাতা, আমেরপাতা, ভাতের মাড় এসব খায় দুম্বা।

প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে উৎসুক জনতা এগুলো দেখতে আসেন। তাদের দেখাদেখি অনেকেই দুম্বা পাল করবেন বলে সেখানে পরামর্শ নিতে আসেন।

আগড়দাড়ি গ্রামের বাসিন্দা আশিকুর রহমান জানান, ‘টেলিভিশন ও ভিডিও ছাড়া তিনি আগে কখনো স্বচোখে দুম্বা দেখেননি। সাতক্ষীরার এই প্রথম দুম্বার খামার তিনি দেখছেন। তিনি এটি দেখে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনিও একটি খামার গড়ে তুলবেন।’   সাতক্ষীরা জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা এবিএম আব্দুর রউফ বলেন, ‘দুম্বা মধ্যপ্রাচ্যের মরু অঞ্চলের প্রাণী। সৌদি আরবের বেশি লালন-পালন হয়ে থাকে। বিশেষ করে কুরবানীর সময় পশুটির চাহিদা প্রচুর বেড়ে যায়। বাংলাদেশেও এটা সম্ভাবনাময় একটি প্রাণী সম্পদ। পরিকল্পিত ভাবে বানিজ্যিক ভাবে দুম্বার খামার  করতে পারলে একদিকে যেমন আমিষের চাহিদা পূরণ হবে। অন্যদিকে আর্থিকভাবেও লাভবান হবেন খামারীরা।’

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল



এই পাতার আরো খবর