ঢাকা, বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

পাহাড়ি ঢলে ফসলের ক্ষতি
লালমনিরহাট প্রতিনিধি

অসময়ে ভারত গজলডোবা ব্যারেজের গেট খুলে দেওয়ায় ও উজানে ভারী বৃষ্টিপাতে তিস্তার পানি আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে তলিয়ে গেছে তিস্তার বুকে উজান ও ভাটিতে কৃষকের লাগানো মরিচ-পেঁয়াজ, রসুন ও মিষ্টি কুমড়ার খেত। ব্যারেজের ৭টি গেট খুলে দেয়া হয়েছে। এতে উজানের প্রচুর পরিমাণ পানি ভাটিতে এসেছে। ফলে পাহাড়ি ঢলের কারণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।

মঙ্গলবার দুপুরে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে পানি ছিল ৫১ দশমিক ১০ সেন্টিমিটার। যা বিপদসীমার ১৫০ সেন্টিমিটার নিচে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে। যা স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার। তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে তিন হাজার কিউসেক পানি ছিল। সেটি বেড়ে বর্তমানে রয়েছে ৯ হাজার কিউসেক হয়েছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ।

এর আগে গত ২৫ মার্চ হঠাৎ তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে তিস্তার বুকে লাগানো বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হয়। চৈত্রে হঠাৎ পানি বৃদ্ধির পর মাত্র দুদিনেই কমে যায় পানি। আবারও তিন দিন পর থেকে তিস্তা পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে। যা অব্যাহত রয়েছে। এতে তিস্তার বুকে চাষাবাদ করা ফসল ডুবে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন স্বপ্ন বোনা কৃষকরা।

কৃষকরা বলছেন, প্রতিবছরই তিস্তার পানি কমে যাওয়ার পর তারা তিস্তার বালুকাময় প্রান্তরে নানারকম ফসল চাষ করেন। এবারে চৈত্র মাসে তিস্তার পানি হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকদের স্বপ্নের মুখে ছাই পড়েছে। তিস্তার ব্যারেজ এলাকার পিঁয়াজ চাষি আলী হোসেন বলেন, জীবনেও দেখি নাই চৈত্র বৈশাখ মাসে তিস্তার পানি বাড়ে। পানি বাড়ার কারণে ৬ বিঘা পিঁয়াজ খেত পানিতে ডুবে গিয়ে নষ্ট হয়েছে। এতে আমার ৩০ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে। আমি অভাবী মানুষ জায়গা জমি নাই তাই তিস্তার বুকে চাষাবাদ করে জীবন যাপন করি। এখন আমার অনেক ক্ষতি হল। তিস্তাপারের কদম আলী জানান, গত ৫ দিনে তিস্তার উজানের প্রচুর পরিমাণে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। 

হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের কৃষক আব্দুল জলিল জানান, তিস্তাচরের প্রায় ছয় বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছি। নদীর পানি বৃদ্ধিতে পিঁয়াজ পচে গিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে প্রায় ৩২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে এখন আমরা নিরুপায় হয়ে পড়ছি। 

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, উজানে বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বিপদসীমার অনেক নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা ব্যারেজ এলাকায় বর্তমানে ৯ হাজার কিউসেক পানি রয়েছে। তবে পানি বৃদ্ধির ফলে তিস্তার বুকে চাষ করা কিছু ফসলের ক্ষতি হয়েছে। 

লালমনিরহাট কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামীম আশরাফ বলেন, তিস্তায় পানি আবারও বৃদ্ধি পেয়ে ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর



এই পাতার আরো খবর