ঢাকা, বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

ধনু নদের পানি কমলেও শঙ্কা কমেনি কৃষকের
নেত্রকোনা প্রতিনিধি
ধনু নদের পানি কমলেও শঙ্কা কমেনি কৃষকের।

নেত্রকোনা জেলার প্রধান নদ-নদীর মধ্যে ধনু অন্যতম। আর এই নদেই পানি বেড়ে হুমকিতে পুরো হাওরাঞ্চল। পাহাড়ি ঢলে গত ২০ দিন ধরে ধনু নদের পানি বৃদ্ধির ফলে বাঁধ ভাঙার ভয়ে কৃষকরা। এদিকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পানি বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও শুক্রবার দুপুরে কমে ২৭ সেন্টিমিটারে এসেছে। কিন্তু শঙ্কা কাটেনি হাওরবাসীর।

ধনু নদের পাড়ে খালিয়াজুরী উপজেলার বিস্তীর্ণ হাওর। হাওরের ফসল রক্ষার জন্য এই নদের পারে উপজেলার ৫৫ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধের সাত কিলোমিটারের কির্তনখোলা বাঁধে দেখা দেয় ভাঙন। যে বাঁধের আওতায় প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমি শুধু কৃষি বিভাগের তথ্য মতেই। পুরোটাই পড়ে যায় হুমকিতে।

গত ২ এপ্রিল ভারতের পাহাড়ি ঢলে বাঁধের কয়েকস্থানে ধসে যায় মাটি। আর এই মাটি ভরাট করতে কৃষকরা স্বেচ্ছাশ্রমে মাটি কাটে। তারপরও দফায় দফায় ধস নামে একই বাঁধের বিভিন্ন পয়েন্টে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে বাঁধ মেরামত অব্যাহত থাকে। এদিকে কাঁচা আধাপাকা ধান কাটতে শুরু করেন কৃষক। ফলে ধানের ফলন পরিপক্ক না হওয়ায় উৎপাদনে কমে আসে। দাম কমে যায় আশঙ্কাজনক। তারপরও যতটুকুই রাখা যায়, তাতেই লাভ মনে করে দিনরাত এক করে ধান কাটতে থাকেন কৃষকরা।

তবে কৃষকরা বার বার যেটি বলছেন, সেটি হচ্ছে প্রতিবছরই এই বাঁধের ভাঙস দেখা দেয়। পিআইসি দিয়ে বাঁধ করানো হয়। তখন কেন স্থানীয় প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড এভাবে তদারকি করেন না? তারা আরও বলেন, এই বাঁধের কাজ নভেম্বরে শুরু হয়ে শেষ হওয়ার কথা ফেব্রুয়ারি মাসে। কিন্তু তারা ফেব্রুয়ারি মাসেই কাজ শুরু করে। যে কারণে মাটি বসতে বসতে সময় নেয়।

এদিকে, চৈত্র মাসেই ঢলের পানি চলে এসেছে। কৃষক ফখরুল আলম বলেন, হাওরের নিয়মটাই এমন। পাহাড়ি ঢলে পানি আগাম আসতেই পারে। কিন্তু পিআইসি প্রশাসন বারবার পানি আগে আসার দোহাই দেয়। এই দোহাই না দিয়ে গভীর জায়গাগুলোতে শ্রমিক দিয়ে মাটি কাটালে শ্রমিকরাও চলতে পারতো। আবার বাঁধটিও শক্ত হতো। কিন্তু সময়ক্ষেপণ করে তারা কাকে কাজ দেবে কাকে দেবে না এই নিয়ে। কাকে দিলে কত টাকা লাভ হবে বা হবে না এসব ভেবে জানুয়ারি মাসও পার করে দেয়। ফলে বারবার কৃষকরা এই ক্ষতির সম্মুখীন হই। আরও প্রায় এক সপ্তাহ লাগবে এই ধান পরিপক্ক হতে। তারপরও আমরা কেটে ফেলছি। তাহলে ধানের মাপে তো কম হবেই। উৎপাদন এবার অর্ধেকও হয় কি না সন্দেহ।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবছর ১ লাখ ৮৪ হাজার ৮২৭ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। তার মধ্যে হাওরাঞ্চলে ৪০ হাজার ৯ হেক্টর। শুধুমাত্র খালিয়াজুরীতেই প্রায় ২০ হাজার হেক্টর।

বিডি প্রতিদিন/এমআই



এই পাতার আরো খবর