ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

আবাদের আওতায় দেড় হাজার একর জমি
মধুপুরে জলাবদ্ধতা দূরীকরণে বিএডিসি’র খাল খনন
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
মধুপুরে জলাবদ্ধতা দূরীকরণে বিএডিসি’র খাল খনন।

টাঙ্গাইলের মধুপুরের অরণখোলা, কুড়াগাছা ও আউশনারা ইউনিয়নের দেড় হাজার একর কৃষি জমি আবাদযোগ্য করতে ও অর্ধলাখ মানুষকে জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা করতে খিরাই খাল ও গুজা খাল খনন করেছে বিএডিসি। সাড়ে নয় কিলোমিটার দীর্ঘ এ দুই খাল দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় বিপুল পরিমাণ কৃষি জমিতে জলাবদ্ধতায় ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হতো।

মধুপুর বিএডিসি সূত্রে জানা গেছে, খাল দুটি দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় ভরাট হয়ে গিয়েছিল। কোনো কোনো স্থানে দৃশ্যমানই ছিল না। ফলে এ খাল দুটি সংলগ্ন দেড় হাজার একর জমির পানি পাশের হাওদা বিলে নিষ্কাশিত হতে পারত না। ফলে ভারী বর্ষণে সকল জমিতে জলাবদ্ধতা তৈরি হতো এবং ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতো।

তাছাড়া জমিগুলো জলাবদ্ধ থাকার কারণে রোপা আমন আবাদ করতে পারতো না। কৃষকদের দাবিতে দুর্ভোগ এড়াতে খাল খননের উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)। চলতি অর্থবছরে বিএডিসি’র চলমান ‘ময়মনসিংহ বিভাগ ও ঢাকা বিভাগের টাঙ্গাইল ও কিশোরগঞ্জ জেলার ক্ষুদ্রসেচ উন্নয়ন প্রকল্পের’ আওতায় ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সাড়ে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ খিরাই খাল ও ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ গুজা খাল পুনঃখনন করা হয়।

উপকারভোগী কৃষক আলী আকবর ও আব্দুস ছাত্তার আকন্দসহ অনেকেই জানান, খাল দুটি খনন করায় দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধাতা থেকে মুক্তি পেয়েছে এলাকাবাসী। এতে বিপুল পরিমাণ কৃষি জমি আবাদের আওতায় আসলো।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মজিবুর রহমান বলেন, খাল খননের ফলে খালের গভীরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিস্তীর্ণ এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনের পাশাপাশি রোপা আমন ও বোরো মৌসুমে খালে পর্যাপ্ত পানি প্রবাহমান থাকবে। শুকনো মৌসুমে এ পানি এলাকার কৃষক সেচ কাজে ব্যবহার করতে পারবে। উৎপাদন খরচও কম হবে।

বিএডিসি’র (ক্ষুদ্রসেচ) প্রকল্পের টাঙ্গাইল জোনের সহকারী প্রকৌশলী আশিক জামান বলেন, খাল খননে বিস্তীর্ণ কৃষি জমির যোগাযোগ সহজ হয়েছে। খালের দুই পাড়ের জমির পানি নির্গমণের জন্য ইউপিভিসি পাইপ দিয়ে খালের প্রয়োজনীয় স্থানে আউটলেট নির্মাণ করা হয়েছে। এতে হাওদা বিলের অনেকদিনের জলাবদ্ধতা দূর হয়েছে এবং বোরো ধান কৃষক নির্বিঘ্নে ঘরে তুলতে পারবে। ফলে অনেক কৃষক উপকৃত হবে এবং বিপুল পরিমাণ কৃষি জমি দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা পাবে।

বিএডিসি’র ‘ময়মনসিংহ বিভাগ ও ঢাকা বিভাগের টাঙ্গাইল ও কিশোরগঞ্জ জেলার ক্ষুদ্রসেচ উন্নয়ন প্রকল্প’ এর প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মুহাম্মদ বদরুল আলম বলেন, ‘কৃষিমন্ত্রীর নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে খিরাই খাল এবং গুজা খাল পুনঃখননের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। খাল পুনঃখননের ফলে খাল পাড়ের জমির জলাবদ্ধতা আর থাকবে না এবং বোরো মৌসুমে খালের জমাকৃত পানি কৃষকরা সেচ কাজে ব্যবহার করতে পারবেন।’

এ ব্যাপারে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল খননে এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মধুপুরে খিরাই ও গুজা খাল খননে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিএডিসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়। খননের ফলে খালের গভীরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ফসল আনা নেওয়া ও পারাপারের জন্য একটি ফুট ব্রিজ নির্মাণের দাবি করেছে এলাকাবাসী। ফুট ব্রিজ নির্মাণের কাজ দ্রুত করা হবে।’

বিডি প্রতিদিন/এমআই



এই পাতার আরো খবর