ঢাকা, বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

কেন বিলুপ্তির পথে গুইসাপ?
নজরুল মৃধা, রংপুর

বর্তমানে গোটা বাংলাদেশেই বিলুপ্তির পথে রয়েছে পরিবেশ বান্ধব নিরীহ প্রাণী হিসেবে পরিচিত গুইসাপ। আগে গ্রামগঞ্জের ঝোপঝাড়ে সচরাচর দেখা গেলও এখন সরীসৃপ জাতীয় প্রাণীটিকে দেখা যায় কালেভদ্রে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মনুষ্যসৃষ্ট নানাবিধ কারণেই গুইসাপ এখন বিলুপ্তির পথে। বনবিভাগের মতে এই প্রাণীটির অস্তিত্ব এখন বিপন্ন।

রংপুর বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে দুই প্রকারে গুইসাপ রয়েছে; একটি সোনালি রঙের, আরেকটি কালো। সোনালি রঙের গুইসাপ প্রায় বিলুপ্তির পথে। বর্তমানে এটির দেখা পাওয়া যায় না বললেই চলে।

তবে মঙ্গলবার বিকেলে রংপুর নগরীর অদূরে বৈরাগিগঞ্জ ব্রিজের পাশে সোনালি বর্ণের একটি গুইসাপের দেখা মিলেছে। এছাড়াও কালো রঙ্গের গুইসাপ মাঝে মধ্যে হাতে গোনা দুই একটি দেখা যায়।

এই প্রাণীটিকে গুইসাপ বলা হলেও প্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি গিরগিটি প্রজাতির প্রাণী। আবাসস্থল, খাদ্য সংকট, কবিরাজদের ওষুধ তৈরি, চামড়া দিয়ে ভ্যানিটি ব্যাগসহ বিভিন্ন ব্যবহার্য পণ্য তৈরিসহ নানা কারণে এই প্রাণী বিপন্ন প্রাণীদের তালিকায় স্থান পেয়েছে।

এই প্রাণীটির বিপন্নের পেছনে মূলত মানুষই দায়ী বলে মনে করছেন প্রাণী ও পরিবেশবিদরা। গুইসাপ দৈর্ঘ্যে ৪ ফুট থেকে ১০ ফুট পর্যন্ত হতে পারে। ওজন ৫ কেজি থেকে ২৫ কেজি পর্যন্ত হয়। এরা সাঁতার ও গাছে উঠতে খুব পটু। 

গুইসাপ মাটির গর্তে, উইঢিবি,গাছের কোটরে বা ফাটলে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। কিন্তু আবাসস্থান আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাওয়ায় নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা করতে পারছে না গুইসাপ। এরা সাধারণত সাপ, ক্ষতিকর পোকামাকড়, কাঁকড়া, শামুক, ইঁদুর,পচা-গলা প্রাণীদেহ, ব্যাঙ ও পাখি ইত্যাদি খেয়ে বেঁচে থাকে। সুযোগ পেলে হাঁস মুরগিও এদের খাবারে পরিণত হয়। এই নিরীহ প্রাণীটি মানুষ দেখলে ভয় পেয়ে পালিয়ে যায়। 

রংপুর বন বিভাগের বন্য প্রাণী ও জীব বৈচিত্র সংরক্ষণ কর্মকর্তা স্মৃতি সিংহ রায় বলেন, মানুষের প্রয়োজনে গুইসাপকে হত্যা করা হচ্ছে। সোনালি প্রজাতির গুইসাপের অস্তিত্ব বিপন্ন। কালো প্রজাতি মানুষ ও প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে কোনরকমে টিকে রয়েছে। এদের রক্ষা করা না গেলে পরিবেশের ক্ষতি হবে। এই প্রাণীটির অস্তিত্ব রক্ষায় জনগণকে সচেতন হওয়ার আহবান জানান তিনি।

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল



এই পাতার আরো খবর