ঢাকা, বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

৩৮ বছর ধরে খেজুরের রস সংগ্রহ করছেন হারুনর রশিদ
নাটোর প্রতিনিধি
হারুনর রশিদ

এলাকায় খেজুর গাছি নামে পরিচিত হারুনর রশিদের বয়স এখন সত্তর ছুঁই ছুঁই। নিজের জমিজমা তেমন নেই বললেই চলে। শীতের কয়েক মাস খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ এবং সেই রস থেকে গুড় উৎপাদন করে যে আয় হয়, সেই আয়ের টাকা দিয়েই সারা বছর সংসার চলে তার। এভাবেই জীবনের ৩৮ বছর সময় পার করেছেন তিনি। গাছি হারুনর রশিদের বাড়ি নাটোরের সিংড়া উপজেলার জোড় মল্লিকা গ্রামে।

সরেজমিন জোড় মল্লিকা গ্রামে দেখা হয় খেজুর গাছি হারুনর রশিদের সাথে। তিনি জানান, এবছর তার খেজুর গাছ আছে ২৩টি। নিজের ৪টি আর বাকি ১৯টি লিজ নেওয়া। মৌসুমে ৩ কেজি গুড় দেওয়ার শর্তে ১৯টি গাছ লিজ নিয়েছেন তিনি। এই ২৩টি গাছ থেকে প্রতি সপ্তাহে গুড় উৎপাদন করছেন ২ মণ থেকে আড়াই মণ। বাজারে প্রতি মণ গুড় বিক্রয় করছেন ৩ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৪ হাজার টাকায়। তাতে সপ্তাহে তার আয় হচ্ছে ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা।

হারুনর রশিদ আরও জানান, আবহাওয়া অনুকূল থাকলে মৌসুমে গড়ে ৩ মাস থেকে ৪ মাস খেজুর রস সংগ্রহ করা যায়। গতবছর তার এই ২৩টি গাছ থেকে আয় হয়েছিল ৬৫ হাজার টাকা। এবছর গুড়ের দাম বেশি থাকায় ১ লাখ টাকার বেশি আয় করার আশা করছেন তিনি।

শীতের মৌসুমে রস সংগ্রহের কাজ ছাড়াও গাছি হারুনর রশিদ বছরের অন্য সময়ে তাল গাছ, খেজুর গাছ, নারিকেল গাছসহ বিভিন্ন গাছ পরিষ্কারের করে বাড়তি আয় করেন। এক ছেলে, এক মেয়ে নিয়ে সংসার হারুনর রশিদের। দুই সন্তানকেই শিক্ষিত করেছেন তিনি। কয়েক বছর আগে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। ছেলে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. সেলিম রেজা বলেন, এই শীত মৌসুমে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় উৎপাদন করে অনেকেই সংসারের বাড়তি আয় করে থাকেন। দেশে খেজুর গুড়ের অনেক চাহিদা আছে। আমরা কৃষকদের জমির আইলে ও বাড়ির পাশে পতিত জায়গায় খেজুর গাছ রোপণের পরামর্শ দিচ্ছি। এছাড়া গাছিরা যাতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন খেজুর রস সংগ্রহ ও গুড় উৎপাদন করে বাজারজাত করতে পারে, সেদিকেও নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই



এই পাতার আরো খবর