ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

পুলিশের সামনে বাউফল উপজেলা চেয়ারম্যানকে কুপিয়ে জখম
পটুয়াখালী প্রতিনিধি
আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের একটি চিত্র

পটুয়াখালীর বাউফলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আনন্দ র‌্যালি নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদার, বাউফল থানার ওসি আল-মামুনসহ কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছেন।

শুক্রবার সকালে বাউফল হাই স্কুল মাঠ থেকে আনন্দ র‌্যালি শুরু হয়ে উপজেলা পরিষদ চত্বরে গিয়ে পৌঁছায়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব হাওলাদার গ্রুপ ও সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ এমপি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রথমে লাঠিচার্জ পরে ২০ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পুলিশ। এ সময় দু’গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এতে শহর জুড়ে আতংকের সৃষ্টি হয়। ব্যবসায়ীরা দোকান-পাট বন্ধ করে দেয়। 

আহত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদারসহ ৬ জনকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের বাউফল উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী ও নেতা-কর্মী সূত্রে জানা যায়, সকালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্ম বার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে উপজেলা পরিষদ চত্বরে ফুল দিতে নেতা-কর্মীদের নিয়ে আনন্দ র‌্যালি সহকারে যাচ্ছিলেন সাধারণ সম্পাদক মোতালেব হাওলাদার গ্রুপ। এ সময় আ স ম ফিরোজ গ্রুপ উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে জনতা ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। অন্যদিকে মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল গ্রুপও উপজেলার কাছাকাছি অবস্থান নেয়। মোতালেব হাওলাদার গ্রুপ উপজেলা পরিষদ চত্বরে ঢুকতে চাইলে তিন গ্রুপের সংঘর্ষের আশংকায় পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় মোতালেব হাওলাদার তার নেতৃত্বে নেতা-কর্মীদের নিয়ে সামনে এগিয়ে গেলে প্রথমে পুলিশ লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার চেষ্টা করে। পরে মোতালেব হাওলাদার জনতা ভবনের দিকে এগিয়ে যেতেই আ স ম ফিরোজ গ্রুপের সাথে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় মোতালেব হাওলাদারসহ তার বেশ কিছু নেতা-কর্মীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করা হয়। পরে উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হলে এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এতে পুলিশসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হন। পরে আহতদের মধ্যে মোতালেব হাওলাদারসহ ৬ জনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের বাউফল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল মামুন বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রথমে লাঠি চার্জ করা হয়। এতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ২০ রাউন্ড রাবার বুলেট ছোড়া হয়েছে। এতে তিনিসহ পুলিশের আরও কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদার আহত হওয়ায় তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। 

এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ এমপি বলেন, সংঘর্ষ কিছু না, সংঘর্ষ বলতে যা বুঝায়, তা না। আসলে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে হাজার হাজার নেতা-কর্মী আসছে এখানে। একটা বাধার সৃষ্টি করা, প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা, নিউজ করার জন্যই বোধ হয় আজকের এই ঘটনা। এটা কোনো ঘটনা না। আমি ছিলাম অনেক পেছনে, ওরা ছিল উপজেলা পরিষদের গেইটের সামনে। আমি জানি না, যারা জানে তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন। 

তিনি আরও বলেন, কিছু কিছু লোকে আঘাত পেয়েছে শুনেছি। আমি এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি, শুনেছি একজন হাসপাতালে ট্রিটমেন্ট নিয়েছে আরেকজনের ছররা গুলি লেগেছে। বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।

বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল



এই পাতার আরো খবর