ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

বগুড়ায় আদা-পেঁয়াজের ঝাঁঝ কমেনি, স্বস্তি নেই সবজিতেও
আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া:

আমদানি বাড়লেও ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে নতুন নীতিমালা গ্রহণ করায় বগুড়ার বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ৮ থেকে ১০ টাকা। সেই সাথে এখনো চড়া আদা-রসুনের বাজার। বাজারে অন্যান্য নিত্য পণ্যের দাম চড়া হলেও স্বস্তি নেই সবজিতেও। মাছ, মাংস ও ডিমের বাজারও বেশি। সব মিলিয়ে বাজারে স্বস্তি মিলছে না ক্রেতাদের। 

সোমবার সকালে বগুড়ার রাজাবাজার, ফতেহ আলী বাজার, গোদারপাড়া বাজার, কলোনী বাজার ও খান্দার বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮৪ থেকে ৯৫ টাকা কেজি। আর আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ প্রকারভেদে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৮ থেকে ১০ টাকার মতো। 

এদিকে খুচরা বাজারে দেশি ও আমদানি করা আদা গত সপ্তাহ থেকে কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে দেশি আদা প্রকারভেদে বিক্রি হয়েছে ১৬০ টাকা থেকে ১৭০ টাকা। চলতি সপ্তাহে ওই আদা বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজি। এছাড়াও রসুন বিক্রি হচ্ছে প্রকারভেদে ১২০ টাকা থেকে ২৪০ টাকা কেজি। 

চলতি বছরের শুরুর দিকে গড়ে প্রতি কেজি আদার দাম ছিল ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকার মধ্যে। কিন্তু কয়েক মাসের ব্যবধানে তা বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ। অথচ সরকারি হিসেবে জানুয়ারি মাসের পর থেকে প্রায় প্রতি মাসেই আদার আমদানি বেড়েছে।

বগুড়া রাজাবাজারের পাইকারী আদা ব্যবসায়ী সুলতান আহম্মেদ জানান, আদা আমদানি করা হলেও তা যথেষ্ট নয়। দেশে এ বছর আদার উৎপাদন কম হয়েছে। আমদানিও চাহিদার তুলনায় কম হয়েছে। এ জন্য দাম অনেক বেশি। তবে অনেক বেশি আমদানি হলে দাম কিছুটা কমতে পারে। মূলত আমদানি করা ৫০ শতাংশ আদাই থাকতো চিনের। বাজারে চিনা আদা না থাকায় সংকট আরও বেড়েছে।  এদিকে খুচরা বিক্রেতা মতিউর রহমান জানান, পাইকারী বাজারে আদার এবং পেঁয়াজের দাম আবার বেড়েছে। যে কারণে আমাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। সেই সাথে রসুনের দামও বাড়তি। পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন জানান এ বছর পেঁয়াজের উৎপাদন অনেক কম হয়েছে। বাজারে দেশি পেঁয়াজের চাহিদা বেশি থাকায় দাম বেশি। ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে নতুন নীতিমালা গ্রহন করায় দাম আগের চেয়ে বেড়েছে।   সবজি বাজারেও স্বস্তি মিলছে না ক্রেতাদের। সব ধরনের সবজির দাম বেশি। বেগুন কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০টাকা, করলা ৬০টাকা, মিষ্টি লাউ ৫০টাকা, নতুন সিম ১৬০টাকা, টমেটো ১২০টাকা, ঢেঁড়স ৪০টাকা, পটল ৩০টাকা, আলু ৫০টাকা, লাল শাক ৪০টাকা, পালং শাক ৬০টাকা, শসা ৫০ থেকে ৬০টাকা, গাঁজর ৮০টাকা। এছাড়াও গত দুই দিনের ব্যবধানে কেজিতে কাঁচা মরিচের দাম কমেছে ৪০টাকা। এখন ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা মরিচ। একই সাথে বেড়েছে মাছ, মাংস ও ডিমের দাম। হঠাৎ করে ডিমের দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। গরুর মাংসের কেজি এখন ৭২০ থেকে ৭৫০ টাকা। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা। সোনালি মুরগি ৩০০ টাকার ওপরে।  বাজার করতে আসা কলোনী এলাকার আব্দুর রাজ্জাক জানান বাজারে সবকিছুর দাম বাড়তি। কোনটা বাদ দিয়ে কোনটা কিনবো বুঝতে পারছি না। সবকিছুই কম কম করে কিনছি। ১ হাজার টাকাতেও বাজার হয় না। টাকার কোনো মূল্যই নেই।  তিনি আরো জানান, যতই দিন যাচ্ছে দাম ততই বাড়ছে। পেঁয়াজ ও সবজির বাজার থেকে শুরু করে অন্যান্য জিনিসের দাম অনেক বেশি। আয় না বাড়লেও খরচ বেড়েছে দিগুণ। চাল, ডাল, কিনে সংসারের অন্যান্য ব্যয় সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ছোট চাকরিজীবীদের জন্য কষ্টটা বেশি। এখন সংসার চালনোই কঠিন। 

বিডি প্রতিদিন/এএম



এই পাতার আরো খবর