ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

বোর্ড চ্যালেঞ্জ করে এসএসসি পরীক্ষায় পাস করলেন ফেল করা বাবা
নাটোর প্রতিনিধি
বাবা ও মেয়ে

নাটোরের লালপুরে বাবা ও মেয়ে একসঙ্গে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে মেয়ে পাস করলেও ফেল করেছিলেন বাবা। পরে বোর্ড চ্যালেঞ্জ করে ৪.০৭ জিপিএ পেয়ে এসএসসিতে কৃতকার্য হয়েছেন বাবা আব্দুল হান্নান। 

তিনি কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে রুইগাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখা থেকে ইলেকট্রনিক ট্রেড থেকে পরীক্ষা দিয়ে পদার্থ বিষয়ে ফেল করেন বলে জানা যায়। আর মেয়ে হালিমা খাতুন গোপালপুর নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস্ হাইস্কুল থেকে মানবিক শাখায় এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। সে ৩.৭২ পেয়ে এসএসসি পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়। 

চলতি বছরের ১১ মে আব্দুল হানান জানিয়েছিলেন, দীর্ঘ ২৫ বছর আগে ১৯৯৮ সালে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিল স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে অকৃতকার্য হওয়ার পর আর লেখাপড়া করা হয়নি। দারিদ্র্যের বাস্তবতায় সংসারের বোঝা মাথায় নিয়ে নেমে পড়েন সংসার জীবনের যুদ্ধে। পৈতৃক সূত্রে গোপালপুর রেলগেট এলাকায় একটা দোকানে চায়ের ব্যবসা শুরু করেন। সংসার জীবনে স্ত্রী, মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে তার। এক ছেলে আবু হানিফ নিরব (১১) নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস হাইস্কুলের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও ছোট ছেলে রমজান মিয়ার বয়স মাত্র চার বছর। 

কিন্তু ছাত্রজীবনের সেই পরাজয়ের গ্লানি মুছে ফেলার প্রবল ইচ্ছা থেকে লোকলজ্জাকে উপেক্ষা করে ২০২১ সালে তিনি উপজেলার রুইগাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম (ভোকেশনাল) শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। 

এবার আব্দুল হান্নান জানান, ফলাফলে এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছি বলে জানাতে পারি। পরে বোর্ড চ্যালেঞ্জ করে এসএসসি পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়েছি। আমি কলেজে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। অসহায় ও গরিব ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার পাশাপাশি তাদের কম্পিউটার শিক্ষার জন্য সহযোগিতা করব। এছাড়া আমি আর আমার মেয়ে কম্পিউটার শিখে দক্ষতা অর্জন করতে চাই। 

এ বিষয়ে উচ্ছ্বসিত মেয়ে হালিমা খাতুন জানান, বাবার মেধা আছে এবং ইচ্ছা শক্তি আছে। পরিবারের সবার সমর্থনও রয়েছে। তাই এ বয়সেও তার লেখাপড়া করার প্রবল ইচ্ছাটার কারণেই এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু ফলাফল আসে এসএসসিতে অকৃতকার্য হয়েছেন। বাবার বিশ্বাস ছিল বোর্ড চ্যালেঞ্জ করলে কৃতকার্য হবেন। বোর্ড চ্যালেঞ্জ করে বাবা এসএসসি পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়েছেন। এতে আমরা অনেক আনন্দিত।

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ



এই পাতার আরো খবর