ঢাকা, সোমবার, ২২ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

হৃদয় হত্যা মামলা: অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা
অনলাইন ডেস্ক

২০২০ সালে বরগুনায় আলোচিত কিশোর সুজন ওরফে হৃদয় হত্যা মামলায় ১৬ অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা এবং তিন জনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার বেলা ১২ টায় বরগুনা শিশু আদালতের বিচারক ও জ্যেষ্ঠ জেলা জজ মো. মশিউর রহমান খান এ রায় ঘোষণা করেন। 

রায়ে ১৬ কিশোর অপরাধীর মধ্যে ১২ জনকে ১০ বছর ও ৪ জনকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ে সাজাপ্রাপ্তদের শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত কারাভোগ করার এবং প্রাপ্ত বয়স্ক হলে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেয়া হয়। ৭ বছর সাজাপ্রাপ্ত ৪ জনকে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে প্রেরণ এবং প্রাপ্ত বয়স্ক হলে বরগুনা কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেয়া হয়। পলাতক ২ আসামির বিরুদ্বে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্র পক্ষের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল। তিনি জানান, সকাল ৯ টায় বরগুনা কারাগারের সেফ হোম থেকে অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৬ জনকে আদালতে হাজির করা হয়। এছাড়াও মামলায় জামিন নিয়ে পলাতক থাকা অপ্রাপ্তবয়স্ক ৩ জনের মধ্যে রায় ঘোষণার সময় একজন স্বেচ্ছায় আদালতে হাজির হন। মোট ৩ বছর ৪ মাসে ৪৪ কার্যদিবসে এ মামলার কার্যক্রম শেষ হয়েছে। এ ছাড়াও এ মামলায় প্রাপ্তবয়স্ক ৯ জনের বিচার বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

পাবলিক প্রসিকিউটর মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল বলেন, আজকের এই রায় একটি দৃষ্টান্তকারী রায়। এ রায়ে বাদী ও রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট। রায়ের মাধ্যমে সারা দেশের কিশোররা বেপরোয়া হওয়া থেকে বিরত থাকতে একটি ম্যাসেজ পাবে। একই সাথে অভিবাবকরাও সন্তানদের ব্যাপারে আরও সতর্ক হবে।   

উল্লেখ্য, হৃদয় বরগুনা সরকারি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট থেকে ২০২০ সালে এসএসসি পরীক্ষা দেয়। ওই বছরের ২৫ মে ঈদের দিন বিকালে সে বন্ধুদের সঙ্গে বুড়ীশ্বর নদীর পাড়ে বল্ক ইয়ার্ডে ঘুরতে যায়। এসময় পূর্ব শত্রুতার পাশাপাশি হৃদয়ের সঙ্গে থাকা এক বান্ধবীকে অভিযুক্তরা উত্ত্যক্ত করলে হৃদয় এর প্রতিবাদ করে। এতে দু'পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হলে অভিযুক্ত নোমান কাজী, ইউনুস কাজীসহ ২৮ জন মিলে প্রকাশ্যে হৃদয়সহ তার কয়েক বন্ধুকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন এবং গুরুতর অবস্থায় হৃদয়কে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৬ মে তার মৃত্যু হয়। পরের দিন হৃদয়ের মা ফিরোজা বেগম বরগুনা থানায় ২০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ১৪-১৫ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে ১৯ জনকে শিশু আদালত ও ৯ জনকে প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে জেলা জজ আদালতে আলাদা বিচার শুরু হয়।

রায় ঘোষণার পর মামলার বাদী হৃদয়ের মা ফিরোজা বেগম বলেন, রায়ে আমি সন্তষ্ট। তবে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। বিভিন্নভাবে মামলা তুলে নিতে আমাকে হুমকি দেয়া হয়েছে, এমনকি আমাকেও প্রয়োজনে আমাকেও হত্যার হুমকি দেয়া হয়।

 

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল



এই পাতার আরো খবর