ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

সদরপুরে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় দখল নিয়ে উত্তেজনা
অনলাইন ডেস্ক
সংগৃহীত ছবি

ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় দখল নিয়ে দু'পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সনের সমর্থকদের দখলে ছিল অফিসটি। শনিবার দলবল নিয়ে সেই অফিসটি দখল নিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ ও তার সমর্থকরা।

শনিবার বেলা ১১টার দিকে দলীয় কার্যালয়টির পুরনো তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে ভাঙ্গায় প্রধানমন্ত্রীর জনসভা উপলক্ষ্যে বর্ধিত সভা করেন কাজী জাফরউল্লাহ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কাজী জাফরউল্ল্যাহর সমর্থকরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবির পাশে থাকা ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সনের ছবি নামিয়ে সেখানে কাজী জাফরউল্লার ছবি টানিয়ে দেওয়া হয়।

বর্ধিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সদরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আলম রেজা। বর্ধিত সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, আমি সদরপুরে আওয়ামী লীগের জন্য সুন্দর একটি অফিস করে দিয়েছিলাম। নিজস্ব অফিস, নিজস্ব দালান; এটি গর্বের ব্যাপার। অথচ, একটি ডাকাতের দল বিএনপি ও জামায়াতের লোকজনদের নিয়ে অফিস দখল করে রেখেছিল।

তিনি আগামী ১০ অক্টোবর ভাঙ্গায় প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও দলীয় লোকজনকে সকালেই মাঠে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানান।

এ বিষয়ে সদরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক আবু আলম রেজা বলেন, দলীয় ওই কার্যালয়টি দীর্ঘদিন ধরে নিক্সনপন্থিরা তালাবদ্ধ করে রেখেছিল। এ কারণে আমরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে কার্যালয়টি খুলে দিতে বলি। প্রথমে আমরা জানতাম কার্যলয়ের তালার চাবিটি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী শফিকুর রহমানের কাছে আছে। তার কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, চাবি তার কাছে নেই। শনিবার আমরা দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে সভা করি।

কার্যালয় থেকে নিক্সন চৌধুরীর ছবি সরিয়ে কাজী জাফরউল্লার ছবি স্থাপন করার সত্যতা নিশ্চিত করেন তিনি।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরীর সমর্থক সদরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কাজী শফিকুর রহমান বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় নিয়ে আগে সমস্যা ছিল, কিন্তু এখন নেই। ওরা (কাজী জাফরউল্ল্যাহপন্থীরা) দীর্ঘদিন ওই অফিসে তালা মেরে রেখেছিল। এতোদিন ব্যবহার করেনি, কোন সভা করেনি। শনিবার সে তালা খুলে সভা করেছে।

আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় দখল ও সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরীর ছবি সরিয়ে ফেলার ঘটনায় দলের একাংশের নেতা-কর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরীর সমর্থকদের দাবি, কাজী জাফরউল্ল্যাহর উপস্থিতিতে যে কাজটি করা হয়েছে তা মেনে নেওয়া যায় না। এই মুহূর্তে আমরা কোন ঝামেলায় জড়াতে চাই না। আমরা স্পষ্ট করেই বলতে চাই, অফিস থেকে সংসদ সদস্যের যে ছবি নামানো হয়েছে তা যথাস্থানে দ্রুত টানাতে হবে। না হলে এর পরিণাম ভালো হবে না।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ ও ২০২৮ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী কাজী জাফরউল্ল্যাহকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন নিক্সন চৌধুরী। এরপর থেকেই আওয়ামী লীগের মধ্যে দুটি গ্রুপ তৈরি হয়। 

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত



এই পাতার আরো খবর