ঢাকা, শনিবার, ২০ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

তিস্তা নদীতে একদিনে পানি এসেছে এক লাখ ৪০ হাজার কিউসেক
নজরুল মৃধা, রংপুর

চলতি মৌসুমে তিস্তা নদীতে সর্বোচ্চ একদিনে পানি এসেছে এক লাখ ৪০ হাজার ৫৫৩ কিউসেক। এটাই এখন পর্যন্ত রেকর্ড। সর্বশেষ ৪ অক্টোবর পানি এসেছে ৮৭ হাজার কিউসেক। ওই দিন ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা নদীর চুংথাং ড্যাম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তিস্তা নদীর পানি হু- হু করে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এসময় লাখ লাখ টন পলির সাথে ভেসে আসে মৃত মানুষের লাশ, বড় বড় গাছ, ডলফিন, বড় বড় বাঘাইরসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। ওই দিন বিপৎসীমার সর্বোচ্চ ৫০ সেন্টিমিটার ওপরে পানি প্রবাহের শঙ্কা থাকলে শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। স্থানীয় প্রশাসন সতর্ক বার্ত প্রচারে ক্ষয়ক্ষতি খুবই কম হয়েছে। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড হাইড্রোলিক বিভাগ সূত্রে জানাগেছে, চলতি বছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত তিস্তার পানি ৬ দফা বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। ডালিয়ায় ব্যারেজ নির্মাণের পরে এবারই একদিনে সর্বোচ্চ পানি এসেছে ১৪ জুলাই। ওই দিন ১ লাখ ৪০ হাজার কিউসেকের বেশি পানি প্রবেশ করেছে তিস্তার বাংলাদেশ অংশে। এছাড়া গত ৪ অক্টোবর পানি এসেছে ৮৭ হাজার কিউসেক। ওইদিন রংপুরের ৫ জেলায় রের্ড এলাট জারি করা হয়েছিল। এই অঞ্চলে খুব একটা ক্ষতি না হলেও ভারতের তিস্তাপাড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রবল স্রোতে বাংলাদেশ ভেসে এসেছে ৬টি লাশ। রংপুর, লালমনিরহাট ও গাইবান্ধা এলাকায় এসব লাশ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া বড় বড় মাছও ভেসে এসেছে। এত বড় মাছ এর আগে তিস্তাপাড়ের মানুষ দেখেনি। বেশ কিছু গাছও ভেসে আসতে দেখা গেছে। এছাড়া এসেছে লাখ লাখ টন পলি। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানাগেছে, প্রতিবছর উজান থেকে ২ কোটি টনের বেশি পলি নদীতে প্রবেশ করায় পানিরস্তর কমে যাচ্ছে। ক্রমাগত পলি পড়ার কারণে নদীর নিম্নাংশ ভরাট হয়ে বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশন হতে না পেরে বন্যার সৃষ্টি হচ্ছে। ক্ষতি হচ্ছে বসত ভিটাসহ বিভিন্ন অবকাঠামো। বর্ষায় ব্যারেজের ৪৪ টি জলকপাট দিয়ে একসঙ্গে পানি নিঃসরণ করতে হয়। এর চেয়ে বেশি পানি বা ঢল হলে ব্যারেজের পাশে ফ্লাড বাইপাসের ফিউজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে খুলে গিয়ে বিকল্প পথে ঘুরে গিয়ে বাড়তি পানি আবার নদীতে পড়ে। 

আবার শুকনো মৌসুমে তিস্তার চারিদিকে দেখা যায় ধুধু বালুচর। এসময় পানি পাওয়া যায় ৪ থেকে ৫ হাজার কিউসেক। পানির অভাবে তিস্তা নদীর আশেপাশের এলাকায় পানিরস্তর অনেক নিচে নেমে যায়। পানির অভাবে অকোজো হয়ে পড়ার উপক্রম দেশের বৃহত্তম তিস্তা সেচ প্রকল্প। ভারত তিস্তার উজানে গজলডোবায় বাধ দিয়ে একতরফা পানি প্রত্যাহারের কারণে তিস্তা প্রকল্পে প্রতিবছরই পানির ঘাটতি দেখা দেয়। আবার বর্ষাকালে প্রবল পানির তোড়ে ব্যারেজ ও আশপাশের অঞ্চল ঝুঁকির মুখে পড়ে। কোটি কোটি টন পলি এসে নদী ভরাট করে। 

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, তিস্তার পানি বর্তমানে বিপৎসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আপাতত বন্যার শঙ্কা নেই। 

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

 



এই পাতার আরো খবর