ঢাকা, শনিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

উত্তরের হিমেল হাওয়ায় বেড়েছে শীতের তীব্রতা
বগুড়ায় জেঁকে বসা শীত আগুন জ্বালিয়ে নিবারণের চেষ্টা
নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া
আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা

বগুড়ায় জেঁকে বসেছে শীত। শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। গত চারদিন ধরে সূর্যের দেখা মিলছে না জেলার কোথাও। রাতে ও সকালে ঘন কুয়াশায় দূরে কিছু দেখা যাচ্ছে না। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় বেড়েই চলছে শীতের তীব্রতা। 

শনিবার সকালে জেলায় সর্বনিম্ন ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে বগুড়া আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এদিকে, শীত নিবারণে সব শ্রেণিপেশার মানুষ গরম কাপড় জড়িয়ে রাস্তায় খড়কুটো, কাগজ জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। কেউবা ঘর থেকেই বের হচ্ছেন না শীতের প্রকোপে। এতে করে দিন মজুরসহ খেটে খাওয়া মানুষের পক্ষে জীবিকা নির্বাহ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। ঘনকুয়াশা উপেক্ষা করে ঘর থেকে বের হলেও কাজ পাচ্ছেন না অনেকেই।

বগুড়া আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, বগুড়া জেলায় শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে। জেলায় শনিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার সকালে ১১ দশমকি ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়, যা চলতি মৌসুমে সর্বনিম্ন। 

শনিবার বগুড়ায় তাপমাত্রা বেড়েছে ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে তাপমাত্রা সর্বনিম্ন ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এলে শৈত্যপ্রবাহ বলা যাবে। 

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, যে কোনো সময় তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসতে পারে। 

জানা যায়, বগুড়া জেলায় গত ৪ দিন ধরে উত্তরের হিমেল হাওয়ায় বাড়িয়েছে শীতের তীব্রতা। হাড় কাঁপানো শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন। জেলার কোথাও সূর্যের দেখা মিলছে না। ঘনকুয়াশা উপেক্ষা করে ঘর থেকে বের হলেও কাজ পাচ্ছেন না খেটে খাওয়া মানুষরা। শীত নিবারণে শহর এবং গ্রামের মানুষগুলো খড়কুটো, পরিত্যক্ত কাগজ জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। 

এদিকে, শীতের তীব্রতা বাড়ায় শহরের ফুটপাত থেকে শুরু করে মার্কেটগুলোতে গরম কাপড় কিনতে ভিড় করছেন সব শ্রেণিপেশার মানুষ। বিশেষ করে ছিন্নমূল মানুষ বেশি বিপাকে পড়েছেন। কনকনে শীতে জবুথবু তারা। 

শহরের রেলস্টেশন এলাকায় ছিন্নমূল মানুষেরা খোলা আকাশের নিচে কোনোরকমে কাঁথা-কম্বল জড়িয়ে কষ্টে জীবনযাপন করছেন। 

এর আগে বগুড়া জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম শহরের রেলস্টেশন এলাকার ছিন্নমূল মানুদের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন। তাতে করে অনেকটাই উপকৃত হয়েছেন এসব মানুষ। হঠাৎ হাঁড় কাপানো শীতে বিপাকে পড়েছে সব শ্রেণি পেশার মানুষ। এমন শীতে হাসপাতালে বাড়ছে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর ভিড়। 

গত এক সপ্তাহ আগে বগুড়ায় তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। উত্তরের হিমেল হাওয়ায় সপ্তাহের ব্যবধানে বগুড়ায় কমেছে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। গত শুক্রবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার আবহাওয়া অফিস সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ১১ দশমিক ৫ ডিগি সেলসিয়াস। সেই সঙ্গে আকাশে মেঘ আর ঘন কুয়াশায় দেখা নেই সূর্যের। 

বগুড়া শহরের কলোনী এলাকার মতিউর রহমান মতি জানান, হঠাৎ করে শীতের তীব্রতা বেড়ে গেছে। শুক্রবার রাতে ঠান্ডা বাতাস, তাই আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন তারা।

রিকশাচালক আব্দুল হামিদ জানান, যত শীতই হোক নিজের ও পরিবারের সদস্যদের খরচ মেটাতে ঘর থেকে বের হতেই হবে। রিকশা না চালালে কি খাব? তাই শীত উপক্ষো করে রিকশা চালাতে বের হয়েছি। সকালে কুয়াশায় কিছু দেখা যায় না, বড় বড় গাড়ি হেডলাইট জ্বালিয়ে সড়ক মহাসড়কে চলাচল করছে। 

বগুড়া আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক গোলাম কিবরিয়া জানান, শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে। শনিবার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত শুক্রবার সর্বনিম্ন ১১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়, যা এই মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে তাপমাত্রা কমেছে ৪ ডিগ্রি সেলিয়াস। এক সপ্তাহ আগে বগুড়ায় তাপমাত্রা ছিল সর্বনিম্ন ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। 

তিনি আরও জানান, তাপমাত্রা সর্বনিম্ন ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এলে শৈত্যপ্রবাহ বলা যাবে। জেলার ওপর দিয়ে মৃদু হিমেল হাওয়া বইছে।

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ



এই পাতার আরো খবর