ঢাকা, শনিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

জমি বিক্রির টাকা নিয়ে বিরোধ, মৃত্যুর দুদিন পর লাশ দাফন
গাইবান্ধা প্রতিনিধি

মরদেহ আটক রেখে জমি বিক্রির ৬০ লাখ টাকার চেক হাতে পেয়ে মৃত্যুর দুদিন পর নিঃসন্তান মোতাহার আলী মুন্সি (৭০) নামে এক ব্যক্তির দাফন সম্পন্ন করল স্বজনরা। মৃত মোতাহার আলী মুন্সি গণপূর্তের বিভাগের সাবেক হেড ক্লার্ক।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার বেতকাপা ইউনিয়নের সাকোয়া মাঝিপাড়া গ্রামে মরদেহ ফেলে রেখে দুদিন ধরে চলে দফায়-দফায় বৈঠক। অবেশেষে আর্থিক সমঝোতার পর নামাজে জানাজা শেষে রাত ১০টার দিকে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়। মৃত মোতাহার আলী মুন্সি ওই এলাকার মৃত ছামসুল হক মুন্সির ছেলে।

ইউপি চেয়ারম্যান, মৃতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, মোতাহার আলী মুন্সি ও তার স্ত্রী মাসুমা বেগম নিঃসন্তান ছিলেন। মারজিয়া (১৫) নামে তাদের এক পালিত মেয়ে রয়েছে। মোতাহার আলী গণপূর্তের চাকুরির সুবাদে ঢাকার কলাবাগান এলাকায় বসবাস করতেন। সেখানে দীর্ঘদিন আগে তিনি ৫৯ শতক জমি ক্রয় করেন। সম্প্রতি সে জমি ২ কোটি ১৮ লাখ টাকায় বিক্রি করেন তিনি।

এদিকে, মোতাহার আলীর দীর্ঘদিন ধরে এ্যাজমাসহ ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। একপর্যায়ে বুধবার ভোর ৫টার দিকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ওইদিনই মৃতের স্ত্রী মাসুমা বেগম, পালিত মেয়ে মার্জিয়া ও স্ত্রীর বড়ভাই নূরুল ইসলাম কাজী লাশ দাফনের জন্য মরদেহ নিয়ে সন্ধ্যার দিকে গ্রামের বাড়ি পলাশবাড়িতে পৌঁছেন। এরপর মৃতের চাচাতো ভাই-বোন, ভাতিজাদের সঙ্গে শুরু হয় জমি বিক্রির টাকার ভাগ নিয়ে দ্বন্দ্ব।

এক পর্যায়ে স্ত্রী মাসুমা বেগম ৬০ লাখ টাকার চেকসহ মুচলেকা লিখে দেওয়ার পর মরদেহ দাফন করা হয়।

মৃতের ছোট ভাই নজরুল ইসলাম মুন্সি বলেন, তারা লাশ নিয়ে আসলেও সঙ্গে চেক নিয়ে আসেনি। পরে ঢাকা থেকে চেক নিয়ে আসতে লাশ দাফনে বিলম্ব হয়েছে।

মৃতের জ্যঠাতো ভাই সেকেন্দার আলী মুন্সি ও ভাতিজা মানিক দাবি করেন, মোতাহার আলী মুন্সির এলাকায় কিছু ঋণ ছিল। এছাড়া তিনি জীবিত থাকতে এলাকায় মসজিদ-মাদ্রাসা করার জন্য টাকা প্রদাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেসব বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে লাশ দাফনে কিছুটা দেরি হয়েছে।

এদিকে, মৃতের স্ত্রী মাসুমা বেগম বলেন, তার স্বামী মসজিদ-মাদ্রাসার জন্য ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা দানের অসিয়ত করে গেছেন।

ঘটনাস্থল থেকে বেতকাপা ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তা ও পলাশবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহফুজ আলম মরদেহ দাফনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিডি প্রতিদিন/এএ



এই পাতার আরো খবর