ঢাকা, রবিবার, ২৮ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

জলদস্যুদের হাতে জিম্মি সাইদুজ্জামানের পরিবারে উৎকণ্ঠা
অনলাইন ডেস্ক

ভারত মহাসাগরে জলদস্যুর কবলে পড়েছে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ। আর সেই জাহাজের ২৩ নাবিক ও ক্রু সদস্যের মধ্যে আছেন নওগাঁর এ এস এম সাইদুজ্জামান। তিনি জাহাজটির প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করছেন। 

জিম্মি হওয়ার পর তিনি স্ত্রী মেহরিমা সাফরিন জামানের সাথে সবশেষ মুঠোফোনে কথা বলেন মঙ্গলবার রাত দশটার দিকে। তিনি বলেছিলেন, ‘আমাদের জাহাজে অ্যাটাক হইছে। জাহাজটি জিম্মি করে সোমালিয়ার উপকূলের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমাদের সবাইকে একটি ঘরে আটকে রাখা হয়েছে। আমাদেরকে মারধর করেনি। আল্লাহর রহমতে এখন পর্যন্ত ভালো আছি, দোয়া কইরো।’

এরপর বুধবার সকাল ৮টার দিকে একটি ভয়েস রেকর্ড বার্তা আসে মেহরিমার মুঠোফোনে। সেই বার্তায় একজনের কণ্ঠ শোনা যায়। তিনি জানান, স্যার ভালো আছেন। সেহরি করে স্যার এখন ঘুমাচ্ছেন। কোনো মেসেজ থাকলে এই নাম্বারে এসএমএস পাঠাবেন।

স্বামীকে নিয়ে উৎকণ্ঠায় থাকায় মেহরিমা সাফরিন বলেন, ‘জাহাজের কাজ অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। অনেক সময় গভীর সমুদ্রে গেলে ১৫-২০ দিন ধরে তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ থাকে না। তখন চিন্তা হতো। নেটওয়ার্কের মধ্যে আসলেই তার সঙ্গে আবার যোগাযোগ হতো। কিন্তু এবারের বিষয়টি অনেক উদ্বেগের। তারা জলদস্যুদের কবলে পড়েছে। খবরে দেখতেছি, মুক্তিপণ না পেলে তাদেরকে নাকি একে একে মেরে ফেলবে। এ অবস্থায় আমি চরম উৎকণ্ঠায় সময় অতিবাহিত করছি। এক বছরের কন্যা সন্তান আর অসুস্থ শশুর শাশুড়িকে  নিয়ে সাহায্যের জন্য কোথাও যেতে পারছি না। সরকার ও জাহাজ কোম্পানি কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের আকুতি, যেভাবেই হোক আমার স্বামীকে জলদস্যুদের হাত থেকে ছাড়িয়ে আনার ব্যবস্থা করুন।’ 

প্রকৌশলী সাইদুজ্জামানের বাবা সাবেক অধ্যক্ষ আব্দুল কাইয়ুম, তিনি নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাবেরও সাবেক সভাপতি। তিনি বলেছেন, ‘মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আমার ছেলের নাম্বার থেকে ফোন আসে। ফোন করে জানায়, তাদের জাহাজে জলদস্যুরা অ্যাটাক করেছে। জাহাজটি সোমালিয়ার উপকূলের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এরপর গতকাল রাতে ও আজ সকালে অন্য নাম্বার থেকে ভয়েস এসএমএস পাঠিয়েছে। ভয়েস এসএমএসে জানিয়েছে, সে ভালো আছে। দস্যুরা কোনো মারধর করেনি। একটি ঘরে তাঁদের সবাইকে আটকে রাখা হয়েছে। জাহাজে খাবার পানির সংকট থাকায় তাঁদেরকে খুব পরিমাণে পানি খেতে দেওয়া হচ্ছে।’

সাইদুজ্জামান ২০ ধরে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দেশি বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানির জাহাজে কাজ করছেন। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রামের গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এস আর শিপিং লিমিটেডের মালিকানাধীন জাহাজে কাজ করছে। এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজ এস আর শিপিং লিমিটেড কোম্পানির একটি জাহাজ। মোজাম্বিকের মাপুতু বন্দর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বেলা দেড়টায় জাহাজটিতে উঠে নিয়ন্ত্রণ নেয় সোমালিয়ার জলদস্যুরা। জাহাজটিতে ৫৫ হাজার টন কয়লা রয়েছে। জাহাজে থাকা ২৩ নাবিকের সবাই বাংলাদেশি। জাহাজটি চট্টগ্রামের কবির গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এস আর শিপিং লিমিটেডের মালিকানাধীন।

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল



এই পাতার আরো খবর