ঢাকা, শনিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

পদ্মায় পানি শুকিয়ে ধু-ধু বালুচর, মহানন্দার বুকে চলছে চাষাবাদ
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
ছবি- বাংলাদেশ প্রতিদিন

চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক সময়ের আগ্রাসী ও উত্তাল পদ্মা নদী এখন মরুসম ধু ধু বালুচরে পরিণত হয়েছে। ফলে এখন নদীতে জেলেদের পরিবর্তে দেখা যায় বালু খেকোদের। তারা দিনরাত অবৈধ পন্থায় পদ্মা তীরবর্তী এলাকা থেকে ভেকু মেশিন বসিয়ে কেটে নিয়ে যাচ্ছে বালু। 

অন্যদিকে, জেলার অপর ৩টি নদী পাগলা, মহানন্দা ও পুণর্ভবার বুকে চলছে চাষাবাদ। বর্তমানে উত্তরাঞ্চলের লাইফ লাইন পদ্মা নদীতে কোথাও হাঁটু পানি আবার কোথাও খানিকটা পানির বিস্তৃতি দৃশ্যমান। উৎস্য ও উজান থেকে পদ্মায় পর্যাপ্ত পানি না আসায় নদী ক্রমশ বালির নীচে চাপা পড়ছে। চারদিক থেকে ধেয়ে আসছে মরুময়তা। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৪ নদীর অস্তিত্ব প্রায় বিলীন। ইলিশের পদ্মায় এখন বালুর রাজত্ব। স্থানীয়রা বলছেন, নদী অববাহিকার লাখো মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে পদ্মায় স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে আনার অন্য কোনও বিকল্প নেই। 

জানা গেছে, বর্ষা  মৌসুমে মাস তিনেকের জন্য পানি থাকলেও বছরের নয় মাসজুড়েই তলানিতে থাকছে পদ্মা নদীর পানি। এ নদীতে এখন ঘোলাপানি আর স্বচ্ছ পানির মায়াবি দৃশ্য আর নেই। স্রোতহীন বয়ে যাচ্ছে এক সময়ের প্রমত্ত পদ্মা নদী। নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে বালুচরের সৃষ্টি হয়েছে। পানিশূণ্য পদ্মায় আটকে যাচ্ছে পাথরবাহী জাহাজ। মাঝ নদীতে গোসল করছে শিশুরা। 

পদ্মা মরে যাবার সাথে সাথে মহানন্দার অস্তিত্বও প্রায় বিলীন। আর পাগলা নদীর আগের পাগলামীও নেই। পূর্ণভবা নদীরও একই চিত্র। এসব নদীতে বর্ষার সময় কিছু পানি থাকলেও সারা বছর থাকে শুকনো। ফলে এখন নদীর বুকে নৌকা চলে না, হয় চাষাবাদ। পদ্মার ওপারে ফারাক্কা বাঁধ দেবার ফলে উত্তরাঞ্চলের নদ-নদী অস্তিত্ব হারানোর পথে। 

এবারও পদ্মায় মাস তিনেকের জন্য যৌবন এসেছিল গত বর্ষা মৌসুমে। কিন্তু বৈশাখ মাসেই নদীর পানি তলানিতে। সামনে রয়েছে খরা মৌসুমের চৈত্র মাস। তখন ‘কি মরণ দশা হবে’ তা নিয়ে দুশ্চিন্তার ভাঁজ নদী তীরবর্তী মানুষের কপালে। বিরূপ প্রভাব পড়েছে প্রকৃতিতে। হারিয়ে গেছে অর্ধশত বেশি প্রজাতির মাছ। নৌ যোগাযোগও আর নেই। নদীর বুকে আবাদ হয় ধানসহ বিভিন্ন ফসলের। 

এদিকে সচেতন মহল মনে করছেন, বর্তমান সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক্য এখন যে কোন সময়ের চেয়ে ভালো। তাই এ সময়ে পানির ন্যায্য হিস্যা বুঝিয়ে নিতে সরকারের দেনদরবার করা উচিত।

আর বর্তমানে নদীর এই করুণ দশা প্রসঙ্গে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর বলেন, উৎস থেকে পানির প্রবাহ স্বাভাবিক না থাকায় নদীর গতিপথ বদলে গেছে। আর দীর্ঘদিন নদীতে ড্রেজিং না হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে দুই কুল উপচে পড়ে, আবার শুষ্ক মৌসুমে এসব নদীতে পানি থাকে না।

বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ



এই পাতার আরো খবর