দিনাজপুরে গরু মোটাতাজাকরণে গো-খাদ্যে খরচ কমাতে খামারিদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ভিন্নধর্মী খাদ্য। এতে কম খরচে অধিক লাভ।
গরু মোটাতাজাকরণে সবুজ ঘাস, খড়, ভুসিসহ বিভিন্ন পুষ্টিকর খাদ্য দিয়ে থাকে খামারিরা। কিন্তু এবার দিনাজপুরের বীরগঞ্জে গরু মোটাতাজাকরণে ব্যাতিক্রমী উদ্যোগে অনেক গরু খামারি সবুজ ঘাস ও খড় এর পাশাপাশি প্রথমবারের মতো ভুট্টা গাছের ৪-৫ ফিট উপরের অংশ কেটে খড় কাটা মেশিন দিয়ে কুচি কুচি করে এবং তা রোদে শুকিয়ে গো খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করছে। ফলে গরু ক্রমেই মোটাতাজা হচ্ছে। এতে খামারিদের গো খাদ্যে খরচ অনেকটাই কমে যাওয়ায় অধিক লাভবান হচ্ছে এলাকার খামারিরা।
এ ব্যাপারে বীরগঞ্জ উপজেলা মোহনপুর ইউপির গরুখামারী রেজওয়ানুল ইসলাম (সবুজ) বলেন, আমার ৭টি গরু আছে। প্রতিদিন গরুগুলোর সবুজ ঘাস, ভুসিসহ বিভিন্ন খাদ্যতে অনেক খরচ হয়। তাই গরুর খাদ্যে খরচ কমাতে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করি। তা হলো ভুট্টা গাছের উপরের অংশ কেটে ছোট ছোট করে খাদ্য তৈরি করা। প্রথমে পরীক্ষামূলক অল্প কেটে গরুকে খাওয়ানোর পর দেখি গরুর পছন্দনীয় হওয়ায় ভালই খাচ্ছে। তখন আমার জমিতে লাগানো ২ বিঘা ভুট্টা গাছের উপরে অংশ মেশিন দিয়ে কেটে সেগুলো ভালভাবে রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করি এবং সময় মতো গরুকে খাওয়াই। এই খাদ্য খাওয়ানোর ফলে অল্পদিনে গরু মোটা হচ্ছে এবং গো-খাদ্যে অনেকটা খরচ কমে যাচ্ছে।
একই চিত্র দেখা যায় আশরাফুল ইসলামের খামারেও। তিনি গরু পালনের পাশাপাশি ৬টি মহিষ পালন করছেন। তিনি এ বছর প্রায় ৩ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করছেন। কয়েক দিনের মধ্যে তিনি তার চাষ করা ভুট্টা ঘরে তুলবেন। কিন্তু তার এলাকার অনেকেই ভুট্টা গাছের উপরের অংশ হতে গরু খাদ্য তৈরি করছে এটা তার জানা ছিল না। কিন্তু তা দেখার পর তিনি ভুট্টা গাছের উপরের অংশ হতে গরুর খাদ্য তৈরি করেন। এতে প্রতি বিঘায় খরচ হয় মাত্র ১২০০ টাকার মতো। সেই সবুজ ঘাস ও অন্যান্য খাদ্যের উপরও চাপ কম হওয়ায় তিনি খুশি।
এ ব্যাপারে বীরগঞ্জ উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোঃ ওসমান গনি বলেন, ভুট্টা গাছের উপরের অংশও পুষ্টিকর গো-খাদ্য। ভুট্টা গাছের ফেলে দেয়া উপরের অংশ খাদ্য হিসেবে গরু-মহিষকে খাওয়ালে খামারির খাদ্য খরচও কমে যাবে। ফলে সবুজ ঘাস ও অন্যান্য খাদ্যের উপর চাপ কমবে। খামারি লাভবান হবে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল