ঢাকা, সোমবার, ২২ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

গরমে কদর বেড়েছে তাল শাঁসের
নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

গ্রীষ্মের দুর্বিষহ গরমে বগুড়ায় কদর বেড়েছে তাল শাঁসের। আবাল-বৃদ্ধ সব বয়সের মানুষের তাল শাঁস খাওয়ার ধুম পড়েছে। ফলে জেলায় বিক্রেতারা দিনভর শাঁস বিক্রি করে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তাল শাঁস দেহকে রাখে ক্লান্তিহীন।

জানা যায়, জ্যৈষ্ঠ মাসের গরমে বগুড়ায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষের জীবনযাপন। এই গরম থেকে স্বস্তি পেতে তাল শাঁসের চাহিদা বেড়েছে। তবে বিগত বছরের তুলনায় তালের দাম বেশি। প্রতিদিন বগুড়ার বিভিন্ন হাট-বাজারে প্রচুর পরিমাণে তাল বিক্রি হচ্ছে। গ্রামাঞ্চল থেকে তাল জেলা শহরে সরবরাহ করা হচ্ছে। মধুমাসে ভিন্নধর্মী তালের শাঁস বরাবরই সকল ক্রেতাদের নজর কাড়ে। বগুড়ার আঞ্চলিক ভাষায় এটি তালখুর নামে অধিক পরিচিত। তালের এই রসালো মিষ্টি স্বাদযুক্ত শাঁস পুষ্টি গুণাগুণে ভরপুর।

চিকিৎসকদের তথ্যমতে, প্রতি ১০০ গ্রামের একটি তালের শাঁসে ৯২ দশমিক ৩ শতাংশই থাকে জলীয় অংশ, ক্যালরি থাকে ২৯, শর্করা ৬ দশমিক ৫ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৪৩ মিলিগ্রাম, খনিজ শূন্য দশমিক ৫ মিলিগ্রাম ও ভিটামিন সি ৪ মিলিগ্রাম।

বৃহস্পতিবার বগুড়া শহরের কাঁঠালতলা, জেলখানা মোড়, সেউজগাড়ী, খান্দার, কলোনী ও মাটিডালি মোড় ঘুরে দেখা যায়, তালের পসরা সাজিয়ে বসেছে মৌসুমী বিক্রেতারা। সেখানে প্রতিনিয়ত ভিড় জমাচ্ছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। তালের শাঁস বিক্রেতারা তাল গাছ থেকে অপরিপক্ক তাল পাইকারি কিনে এনে বিক্রয় করেছেন।

শহরের খান্দার এলাকায় তাল শাঁস বিক্রেতা আলম মিয়া জানান, শাজাহানপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে হাজার খানেক তালগাছ আছে। এসব স্থান থেকে প্রতিটি তাল গাছ ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় কিনে আনি। তাল গাছে ছোট বড় মিলে ৩০০ থেকে ৪০০টি তাল থাকে। প্রতিদিন খুব ভালো বিক্রি হয় তাল শাঁস। ১ পিস তাল শাঁস ৫ টাকায় বিক্রি করা হয়। আর ১টি তাল ১৫ থেকে ২০ টাকা বিক্রি হয়ে থাকে। দিনে গড়ে ২৫০টি থেকে ৩০০টি বিক্রি করি। এতে প্রতি তালে লাভ হয় ৪ থেকে ৫ টাকা।

তিনি জানান, এটি মৌসুমী ব্যবসা। এখন থেকে শুরু করে আগস্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলবে এ ব্যবসা।

তালের শাঁস কিনতে আসা এনজিও কর্মী মাহফুজ আলম জানান, গরমের এই সময়টায় আমার পরিবারের সবাই তাল শাঁস প্রচুর খায়। এটি শরীরের জন্য অনেক উপকারী।

বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আবদুল ওয়াদুদ জানান, তালের শাঁস অতি পুষ্টিকর ও ঔষধিগুণ সমৃদ্ধ। মৌসুমী ফলগুলোতে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর পদার্থ ও ফরমালিন ব্যবহার করা হয়। ফলে ফলগুলো মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু তাল শাঁসে কোনো প্রকার রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহার করা হয় না। তাই তাল শাঁস যেমন স্বাস্থ্যকর, তেমনি মানবদেহের জন্য খুবই উপকারী।

বিডি প্রতিদিন/এমআই



এই পাতার আরো খবর