ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

তুচ্ছ ঘটনায় তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রকে তুলে নিয়ে আছাড়
মেহেরপুর প্রতিনিধি
হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে চিকিৎসাধীন রিজন

ছেলের গায়ে ফুটবল লাগার ঘটনাকে কেন্দ্র করে মেহেরপুরে তৃতৃীয় শ্রেণির এক ছাত্রকে শ্রেণিকক্ষ থেকে তুলে নিয়ে আছাড় মারার অভিযোগ উঠেছে এক অভিভাবকের বিরুদ্ধে। বুধবার মুজিবনগর থানার বিশ্বনাথপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। 

এ বিষয়ে মুজিবনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আহত রিজন বিশ্বনাথপুর গ্রামের মিরাজুল শেখের ছেলে।

জানা গেছে, অভিযুক্ত অভিভাবকের নাম মাহাবুবুল (৩২)। তিনি ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোবারক আলীর ভাগ্নে। 

স্থানীয়রা ও রিজনের সহপাঠীরা জানান, গত মঙ্গলবার বিকালে রিজন মাঠে ফুটবল খেলছিল। এসময় রিজনের বল একই গ্রামের অভিযুক্ত মহিবুলের ছেলে শাফিনের (৮) গায়ে লাগে। এর জের ধরে বুধবার দুপুরে শাফিনের বাবা মহিবুল বিশ্বনাথপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এসে শ্রেণিকক্ষ থেকে রিজনকে বের করে নিয়ে দু পা ধরে শূন্যে তুলে আছাড় মারেন। পরে তাকে দু’ পা ধরে বিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় ছেচড়াতে থাকেন। এ সময় বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ইয়াসমিন খাতুন তাকে উদ্ধার করেন। খবর পেয়ে রিজনের পরিবার তাকে মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্ষে ভর্তি করে।

বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র সোহান ও তামিম বলেন, রিজন আমাদের সাথে বসে ছিল। হঠাৎ করে ওই ভয়ঙ্কর লোকটা এসে তাকে একটানে বের করে নিয়ে দু’পা ধরে শূন্যে তুলে ঘরের বাইরে ছুঁড়ে ফেলে। এরপর আবার তার পা ধরে বিদ্যালয়ের সারা মাঠ ছেচড়িয়ে নিয়ে বেরায়।

বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোবারক আলী বলেন, ঘটনাটি সামাজিকভাবে মীমাংসার চেষ্টা চলছে। তবে থানা থেকে এ বিষয়ে ফোন দিয়েছিল আমরা কোনও বক্তব্য দিইনি। তাই শাফিনের আত্মীয়-স্বজন আমাকে বিদ্যালয়ে এসে শাসিয়েছে। এ বিষয়ে আমি মুজিবনগর থানা, মেহেরপুর পুলিশ সুপার-সহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকের কাছে লিখিত অভিযোগের প্রস্তুতি নিচ্ছি।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (ভারপ্রপ্ত প্রধান শিক্ষক) শরিফুল ইসলাম বলেন, টিফিনের সময় রিজনকে ক্লাস থেকে বের করে নিয়ে কী করেছে আমি জানি না। সে সময় আমি অন্য ক্লাসে ছিলাম। বিষয়টি স্কুল কমিটিকে জানানো হয়েছে।

বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি মর্জিনা খাতুন বলেন, বিদ্যালয় থেকে আমাকে কিছু জানানো হয়নি। এখানে আমার মেয়ে পড়ে। বিদ্যালয়ে হট্টগোলোর খবর শুনে আমি এসেছি। এর বেশি কিছু আমি জানি না।

মুজিবনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক সুপ্রিয়া গুপ্ত বলেন, রিজনের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। কোথাও কোথাও থেতলিয়ে গেছে। তবে সে এখন আশঙ্কামুক্ত।

মুজিবনগর থানার ওসি উজ্জল কুমার বলেন, রিজনের পরিবার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিডি প্রতিদিন/একেএ



এই পাতার আরো খবর