ঢাকা, সোমবার, ২৯ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযানে আরসার কমান্ডার গ্রেফতার
কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিশেষ অভিযান চালিয়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও সে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যবহৃত একটি জি-৩ রাইফেল ও ৫ রাউন্ড তাজা গুলিসহ মিয়ানমারের সন্ত্রাসী গ্রুপ আরসার গান গ্রুপ কমান্ডার মো জাকারিয়াকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৫ এর একটি টিম। বৃহস্পতিবার রাতে উখিয়া বালুখালী ১০ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একটি ঘর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আজ শুক্রবার দুপুরে কক্সবাজার র‍্যাব কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান র‍্যাব ১৫ এর অধিনায়ক লে কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন। 

প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, সম্প্রতি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশনের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাবের গোয়েন্দা সূত্রে তথ্য পায় উখিয়ার ১০নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মিয়ানমারের সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি আরসার কতিপয় সদস্য ক্যাম্পে অস্থিরতা ও নাশকতার জন্য পার্শ্ববর্তী দেশে হতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অস্ত্র নিয়ে এসেছে। এ সূত্র ধরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে র‌্যাবের গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রাতে উখিয়ার ১০নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একটি ঘরে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় র‌্যাবের উপস্থিতি বুঝতে পেরে পালানোর চেষ্টাকালে আরসা সন্ত্রাসী মোঃ জাকারিয়াকে (৩২) গ্রেফতার করে। গ্রেফতার জাকারিয়া ১০ নম্বর ক্যাম্পের এফ ১৭ ব্লকের বাসিন্দা মৃত আলী জোহরের পুত্র। তার দেয়া তথ্য মতে একটি ঘর থেকে একটি জি ৩ রাইফেল ও ৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। রাইফেলটি মিয়ানমার সেনাবাহিনীসহ সেদেশের বিভিন্ন আইনশৃংখলা বাহিনীর ব্যবহার করে থাকে ব্রিফিংয়ে উল্লেখ করা হয়। 

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার জাকারিয়া জানায়, গ্রেফতারকৃত জাকারিয়া ২০১৭ সালে সীমান্ত পার হয়ে মিয়ানমার হতে বাংলাদেশে প্রবেশ এবং ক্যাম্প-১০ এ সপরিবারে বসবাস শুরু করে। তার সাথে আরসার শীর্ষ কমান্ডার আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনির সাথে সু-সম্পর্ক গড়ে উঠলে সে আরসায় যোগদান করে। বাংলাদেশে প্রবেশের প্রথম দিকে সে আরসার সোর্স   এবং পরবর্তীতে গান গ্রুপের সক্রিয় সদস্য হিসেবে কাজ করে। এরপর ২০২৩ সালের শেষের দিকে সে রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১০ এর ব্লক-এফ/১৭ এর ব্লক কমান্ডার হিসেবে নিয়োগ পায়। এ সময় তার নেতৃত্বে আরসার অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অপহরণ, অস্ত্র, মাদক, চাঁদাবাজি ও সাধারণ রোহিঙ্গাদের নির্যাতনসহ বিভিন্ন অপরাধ কার্য পরিচালনা হতো। 

ব্রিফিংয়ে র‍্যাব অধিনায়ক জানান, ২০২২ সালে গোয়েন্দা সংস্থা ও র‌্যাবের মাদকবিরোধী যৌথ অভিযানের সময় আরসা সন্ত্রাসীদের হামলায় গোয়েন্দা সংস্থার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নিহত হওয়ার পর ক্যাম্প এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধি করলে সে পালিয়ে পুনরায় মিয়ানমারে চলে যায়। পরবর্তীতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার বাংলাদেশে প্রবেশ করে এবং গান গ্রুপ কমান্ডার হিসেবে বিভিন্ন কিলিং মিশন ও অপরাধমূলক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করে। সে অস্ত্র চালনায় দক্ষ হওয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সংগঠিত বিভিন্ন নাশকতা, মারামারি, অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরী, অপহরণ, অস্ত্র, মাদক, চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে কিলিং মিশনে অংশগ্রহণ করতো বলে  জানায়। 

বিডি প্রতিদিন/এএ



এই পাতার আরো খবর