ঢাকা, সোমবার, ২৯ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

খুনের প্রতিশোধ নিতে খুন
টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি

কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপে পূর্বশত্রুতার জেরে ছুরিকাঘাতে খুন হন রেজাউল করিম নামের এক যুবক। এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নিতে কয়েক ঘণ্টা পর সাইফুল ইসলাম নামে আরেক যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যা করার অভিযোগ উঠে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার বিকাল পাঁচটার দিকে উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ দক্ষিণপাড়া দোকানের সামনে সাইফুল ইসলামকে ছুরিকাঘাত করা হয়। তিনি ওই এলাকারই বাসিন্দা ছিলেন। পরে আহত অবস্থায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে মৃত্যু হয় তার। এর আগে একই দিন সকালে শাহপরীর দ্বীপ মিস্ত্রিপাড়া এলাকার বাসিন্দা রেজাউল করিমকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গনি পৃথক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি বলেন, পূর্বশত্রুতার জেরে একই দিনে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলায় দুজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত উভয় পক্ষের কোনো ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। নিহত সাইফুলের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুল মান্নান জানান, বৃহস্পতিবার বিকালে শাহপরীর দ্বীপ দক্ষিণপাড়া জামে মসজিদ সংলগ্ন জোবায়েরের দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন সাইফুল ইসলাম। ওই সময় মোহাম্মদ আয়াস ও মোহাম্মদ রফিকের নেতৃত্বে কয়েকজন সাইফুলের ওপর হামলা চালায়। তারা সাইফুলকে মারধর করার পাশাপাশি ছুরিকাঘাত করে। এ সময় সাইফুলের বড় বোন ফাতেমা ও স্ত্রী জাহেদাকে মারধর করা হয়। পরে আহত অবস্থায় সাইফুলকে প্রথমে টেকনাফ হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সাইফুলের বড় বোন ফাতেমা তার ভাই নির্দোষ দাবি করে বলেন, বানু ও নুরু হাকিম বংশের মধ্যে এক বছর ধরে হামলা ও মামলার ঘটনা চলছে। বৃহস্পতিবার সকালে বানুপক্ষের হামলায় রেজাউল নামে একজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এর প্রতিশোধ হিসেবে অপরপক্ষের (নুর হাকিম) লোকজনকে খুঁজতে গিয়ে আমার ভাইকে দোকানে বসে থাকা অবস্থায় মারধর করে হত্যা করা হয়েছে। তাদের মারধরের শিকার আমি নিজেও হয়েছি। পাশাপাশি সাইফুলের স্ত্রী জাহেদাকেও তারা মারধর করে আহত করেছে। বৃহস্পতিবার সকালের ঘটনার সঙ্গে জড়িত ফরহাদ দূর সম্পর্কে আমাদের মামা হওয়ায় প্রতিপক্ষের লোকজন সাইফুলকে মারধর করে হত্যা করেছে।

নিহত রেজাউল করিমের মামা মোহাম্মদ আয়াস বলেন, প্রতিপক্ষের সঙ্গে আমাদের বিরোধ রয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে আমি, শাহ এমরান, নুর করিম, রেজাউল করিমসহ চারজন একটি সিএনজি (অটোরিকশায়) করে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা করি। পথিমধ্যে শাহপরীর দ্বীপ তিনরাস্তার মাথা নামক এলাকায় উত্তরপাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ ফরহাদের নেতৃত্বে কয়েকজন দা, লম্বা কিরিচ ও লোহার রড নিয়ে অটোরিকশাটির গতিরোধ করে। এ সময় প্রাণ বাঁচাতে রেজাউল করিমসহ চারজন পালানোর চেষ্টা করলে তাকে ধাওয়া করে শরীরের বিভিন্ন অংশে কুপিয়ে মাটিতে ফেলে রাখা হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে  নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

বিডি প্রতিদিন/এএ



এই পাতার আরো খবর