ঢাকা, সোমবার, ২৯ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

২০০ মেট্রিক টন খাদ্যপণ্য নিয়ে সেন্টমার্টিনে পৌঁছাল জাহাজ
আব্দুস সালাম, টেকনাফ (কক্সবাজার):

কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্টমার্টিন দ্বীপ রুটে নৌযান চলাচল বন্ধ হওয়ার ৯ দিন পর সেন্টমার্টিন দ্বীপ বাসীদের জন্য ২০০ মেট্রিক টন খাদ্যপণ্য নিয়ে ঘাটে পৌঁছাল একটি জাহাজ। প্রশাসনের বিশেষ ব্যবস্থাপনায় শুক্রবার এমভি বার আউলিয়া নামে একটি জাহাজে করে কক্সবাজার থেকে পাঠানো হয়েছে ২০০ মেট্রিক টন নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য। 

জেলা প্রশাসন বলছে, পাঠানো খাদ্যপণ্য দিয়ে আগামী এক মাস পর্যন্ত চলতে পারবেন সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দারা।

শুক্রবার ২টার দিকে কক্সবাজার শহরের নুনিছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে দেড় শতাধিক যাত্রী ও ২০০ মেট্রিক টন খাদ্যপণ্য নিয়ে জাহাজটি ছেড়ে যায়। জাহাজের নিরাপত্তায় রয়েছেন বিজিবি ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা। শুক্রবার রাত ১০টা নাগাদ জাহাজটির দ্বীপে পৌঁছানোর কথা ছিল। তবে সাগর উত্তাল থাকায় কিছুটা বিলম্ব হয়। শুক্রবার রাত ১২টায় জাহাজটি সেন্টমার্টিন দ্বীপের জেটিতে পৌঁছায় বলে জানিয়েছেন এমভি বার আউলিয়া জাহাজের কক্সবাজারের পরিচালক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, মিয়ানমার সীমান্ত থেকে গোলাগুলির কারণে টেকনাফ-সেন্টমাটিনদ্বীপ নৌরুটে নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর গত ৯ দিন দ্বীপে খাদ্যপণ্য পৌঁছানো যায়নি। যার কারণে দ্বীপে দেখা দেয় খাদ্যসংকট। অবশেষে ৯ দিন পর প্রশাসনের বিশেষ ব্যবস্থাপনায় জাহাজে করে কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিনে খাদ্যপণ্য পৌঁছানো হয়েছে।

ব্যবসায়ী মো. হারুন বলেন, জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জাহাজ ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাই চাল, ডাল কাচা তরিতরকারি থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য কক্সবাজার থেকে জাহাজে করে সেন্টমার্টিনদ্বীপে নিয়ে যাচ্ছেন। এখন আর দ্বীপে খাদ্যসংকট থাকবে না।

এদিকে খাদ্যপণ্যের পাশাপাশি দ্বীপে ফিরে যাচ্ছেন টেকনাফে বিভিন্ন ধরনের কাজে এসে আটকে পড়া দ্বীপের অনেক বাসিন্দা। নিরাপদে দ্বীপে ফেরার ব্যবস্থা হওয়ায় দারুণ খুশি তারা।  দ্বীপের বাসিন্দা আব্দুল মালেক বলেন, এত দিন ধরে শঙ্কায় ছিলেন। এবার মনে হয় কোরবানির ঈদ পরিবার থেকে বিচ্ছিন্নভাবে করতে হবে। ১০ দিন পর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নিরাপদে জাহাজে করে সেন্ট মার্টিন যেতে পেরে খুবই ভালো লাগছে।

এমভি বার আউলিয়া জাহাজের কক্সবাজারের পরিচালক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, প্রশাসন যত দিন চাইবে তত দিনই কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন নৌপথে জাহাজ চলাচল করবে। এই জাহাজ ১২ মাস সাগরপথেই চলাচলের সক্ষমতা রয়েছে। কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, আপাতত বিশেষ ব্যবস্থায় খাদ্যপণ্য পাঠানো হয়েছে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে, যা এক মাস পর্যন্ত চলবে। পরে যদি আবার প্রয়োজন পড়ে তাহলে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।

এদিকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মর্টার শেল ও গ্রেনেড বিস্ফোরণের শব্দে কাঁপছে কক্সবাজারের টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনের সীমান্ত এলাকা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে ভোররাত পর্যন্ত থেমে থেমে চলে এই বিস্ফোরণ। তবে শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আর কোনো শব্দ পাওয়া যায়নি।

এছাড়া অপরদিকে নাফ নদীর মোহনা এলাকায় অবস্থানরত একটি জাহাজ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথের শাহপরীর দ্বীপ বদরমোকাম এলাকায় অবস্থানরত জাহাজটি মিয়ানমারের নৌবাহিনীর। তবে জাহাজটি মিয়ানমারের নাইক্ষ্যংদিয়া অংশে অবস্থান করছে বলে নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী।

বিডি প্রতিদিন/এএম



এই পাতার আরো খবর