কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বজরা ইউনিয়নে তিস্তা নদীতে নৌকাডুবিতে এখনও ছয়জন নিখোঁজ রয়েছে বলে স্বজনরা জানিয়েছে।
বুধবার (১৯ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ২৫ জন যাত্রী নিয়ে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার সাপটানা এলাকায় বিয়ে খেতে গিয়ে নৌকাডুবিতে নিখোঁজের ঘটনাটি ঘটে।
নৌকার যাত্রী বজরা মিয়াজিপাড়ার আমজাদ হোসেনের ছেলে আরিফুল ইসলাম জানান, আমরা বিয়ে খাওয়ার উদ্দেশ্যে সাপাটানা যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে বৃষ্টি আর ঝড়ো বাতাসের ফলে বজরার সাতালস্কর এলাকায় হঠাৎ করে নৌকাটি ডুবে যায়। আমি কোনো রকমে সাঁতরে তীরে পৌঁছাই। এ সময় ধরাধরি করে মোট ১৮ জন পাড়ে উঠতে পারি। কিন্তু ২৫ জনের মধ্যে সাত জনকে পাওয়া যায়নি। পরে আজিজুর রহমানের মেয়ে আয়শা খাতুনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এখন পর্যন্ত আমার ভাগ্নে আনিছুর রহমান (৩০), তার স্ত্রী রূপালী বেগম (২৫), মেয়ে আইরিন (৯), ভাতিজি কয়জন আলীর মেয়ে কুলসুম (৩) ও আজিজুর রহমানের ছেলে শামিমকে (৫) পাওয়া যায়নি। তারা নদীতে নিখোঁজ অবস্থায় রয়েছে।
নৌকার যাত্রী আমিনা বেগম জানান, আমার মা ও ভাতিজাসহ ৪ জন দাওয়াত খেতে যাওয়ার সময় নৌকাটি তিস্তার খরস্রোতে ডুবে যায়। তারা কোনো রকমে সাঁতরিয়ে তীরে উঠলেও ভাতিজা শামিম ডুবে যায়। তাকে এখনো পাওয়া যায়নি।
অপর যাত্রী শরিফা বেগম জানান, নৌকাডুবির সময় আমার তিন বছরের শিশু কুলসুম নদীতে ডুবে যায়। আমি প্রচুর পানি খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। দুপুর পর্যন্ত উলিপুর হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার পর আজ বাড়ি ফিরেছি।
বিষয়টি নিয়ে কুড়িগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার শরিফুল ইসলাম জানান, বৈরী আবহাওয়ায় ডিঙি নৌকায় করে ২৫ জন যাত্রী নিয়ে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার সাপাটানা এলাকায় যাওয়ার সময় নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটে। ইতোমধ্যে একজন শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ১৮ জন তীরে উঠতে পেরেছে। এখনো ছয়জন নিখোঁজ রয়েছে বলে তারা দাবি করছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে রংপুর থেকে ছয় জন ডুবুরি এবং কুড়িগ্রাম থেকে পাঁচ জন সাহায্যকারীসহ মোট ১১ জন উদ্ধার কাজ পরিচালনা করছে। এখন পর্যন্ত কাউকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতাউর রহমান জানান, নৌকার যাত্রীদের কথামতো নৌকায় থাকা আরও ছয়জন যাত্রী নিখোঁজ রয়েছে বলে জানতে পেরেছি। তাদের উদ্ধারে রংপুর থেকে ডুবুরির দল তিস্তা নদীতে তল্লাশি চালাচ্ছে। এখন পর্যন্ত কাউকে পাওয়া যায়নি।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত