কুমিল্লায় টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গা যুবককে জন্ম নিবন্ধন প্রদানের অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগে জেলার মুরাদনগর উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সচিব ইসমাইল হোসেনকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। শুক্রবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
ইসমাইল কুমিল্লার আদর্শ উপজেলার গুনানন্দি গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে। উপজেলা সদরের নিমাইকান্দি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে কুমিল্লা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল।
জানা যায়, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে মুরাদনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঘোড়াশাল গ্রামের ভুয়া পরিচয়ে জন্ম নিবন্ধন বানিয়ে পাসপোর্ট করতে এসে ইয়াছিন (১৯) নামে এক রোহিঙ্গা যুবক আটক হন। পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তারা রোহিঙ্গা যুবককে কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।
গোয়েন্দা পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রোহিঙ্গা যুবক ইয়াছিন জানান, তিনি মিয়ানমারের বলিবাজার এলাকার সৈয়দ হোসেনের ছেলে। মিয়ানমার থেকে গত ২০ দিন আগে বাংলাদেশে আসার পর কক্সবাজার বালুখালি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ব্লক-৯ থাকতেন। তার চাচাতো ভাই ওসমান কুমিল্লা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস সংলগ্ন মদিনা ট্রাভেলসের হাসান মাহমুদ ও মোশাররফ নামে ২ দালালের কাছে পাসপোর্ট করার জন্য চুক্তি করেন। চুক্তি অনুযায়ী হাসান মাহমুদ ও মোশাররফ কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার পশ্চিম ঘোড়াশাল গ্রামের ভুয়া ঠিকানায় রোহিঙ্গা যুবক ইয়াছিনের সকল কাগজপত্র তৈরি করে দেন।
এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন গোয়েন্দা পুলিশ। পরে রোহিঙ্গা যুবক কীভাবে জন্ম নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ করেছেন, এ বিষয়টি তদন্তে নামে গোয়েন্দা পুলিশ। তদন্তে ইউপি সচিব ইসমাইল হোসেনসহ বেশ কয়েকজনের সম্পৃক্ততা থাকার তথ্য পায় গোয়েন্দারা।
এ বিষয়ে মুরাদনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী তুফরীজ এটন বলেন, আমি সচিবকে সর্বোচ্চ সুবিধা দিয়েছি। তারপর তাকে কেন এসব করতে হবে। যারা টাকার বিনিময়ে এসব করেছে, তারা শাস্তি পাবে।
কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজেশ বড়ুয়া জানান, রোহিঙ্গা যুবককে জন্ম নিবন্ধন দেওয়ার মামলায় সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে ইউপি সচিব ইসমাইলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই