ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

রাজশাহীতে মানববন্ধনে হামলা, আওয়ামী লীগ নেতাকে কোপালেন পৌর মেয়র
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
রাজশাহীর বাঘায় পৌরসভার সেবা বৃদ্ধি ও কর কমানোর দাবিতে চলা মানববনন্ধনে হামলা চালিয়ে বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুলকে কুপিয়ে জখম করেছেন পৌর মেয়র আক্কাস আলী ও তার অনুসারীরা। আজ শনিবার সকাল ১০টায় উপজেলা গেটের সামনে মানববন্ধন চলাকালে এ হামলার ঘটনা ঘটে। পরে দুইপক্ষের মধ্যে চলা সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বাঘা পৌর সদর।   প্রথম থেকেই পুলিশ সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে অতিরিক্ত পুলিশ এসে প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে টিয়ারগ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। গুরুতর আহত বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুলকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।    স্থানীয়রা জানান, বাঘা পৌরসভার দুর্নীতি ও পৌরসভার মেয়র আক্কাস আলীর দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতি, স্বেচ্ছাচারি কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে সচেতন নাগরিক কমিটির ব্যানারে মানববন্ধন ডাকে উপজেলা আওয়ামী লীগ। সকালে মানববন্ধন শুরু হলে তাতে হামলা চালান আক্কাস আলী ও তার অনুসারীরা। এতে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এসময় বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ হয়। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ করতে বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলিও ছুঁড়ে।    মানববন্ধনে অংশ নেওয়া রোকনুজ্জামান রিন্টু জানান, তাদের শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে হঠাৎ করেই পৌর মেয়র আক্কাস আলী ও তার অনুসারীরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। আক্কাস আলী হাসুয়া দিয়ে কুপিয়ে জখম করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুলকে। তার অবস্থা গুরুতর। আহসানুল ইসলাম পিন্টু জানান, পৌর মেয়র আক্কাস আলী পৌরসভাকে দুর্নীতির আখড়া বানিয়েছেন। পৌরকর বৃদ্ধি করে নাগরিক ভোগান্তি বাড়িয়েছেন। তারই প্রতিবাদে মানববন্ধন ছিল। সেখানে হামলা চালালো হয়।    রাজশাহীর পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান জানান, আগে থেকেই দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছিল। পুলিশের পক্ষ থেকে কথাও বলা হয়েছিল। কিন্তু তারপরও এমন ঘটনা ঘটলো। পুলিশ টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। একজনের অবস্থা গুরুতর।   দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল ও আড়ানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামকে দেখতে যান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী আবদুল ওয়াদুদ দারা। এসময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘যারা দলের কোনো নেতার প্রশ্রয়ে, দলের নেতার উপর এমন নৃসংশ হামলা চালিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে জানানো হবে। দলের নাম ভাঙিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না।’ হামলায় জড়িতদের গ্রেফতাদের পুলিশকে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।   রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহমেদ জানান, ধারালো অস্ত্র দিয়ে আশরাফুল ইসলাম বাবুলের মাথায় গুরুতর জখম করা হয়েছে। প্রাথমিক অস্ত্রোপচার শেষে তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তবে তার অবস্থা সংকটাপন্ন।       স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এর আগে গত ১০ জুন বাঘা সাবরেজিস্ট্রি অফিসে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হন। দলিল লেখক সমিতির সাবেক কমিটি ও বর্তমান কমিটির মধ্যে ওই মারামারির ঘটনা ঘটে। পরে গত ২০ জুন রাজশাহীর বাঘা উপজেলার সাবরেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক সমিতির কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করে উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রের পক্ষ। শনিবার মেয়রের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে সচেতন নাগরিক কমিটির ব্যানারে মানববন্ধন করছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়র বিরোধীরা।

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল



এই পাতার আরো খবর