ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

শরীয়তপুরে পদ্মার চরাঞ্চলে বাড়ছে রাসেলস ভাইপার আতঙ্ক
অনলাইন ডেস্ক

শরীয়তপুরে পদ্মার চরাঞ্চল সখিপুরের কাঁচি কাটায় বাড়ছে রাসেল ভাইপার সাপের আতঙ্ক। বাসা বাড়িতে সাপের দেখা মিলছে। আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ, কৃষকরা ধান কাটতে গেলে দেখছেন এ সাপ। ভয়ে কৃষকরা এখন জমিতে যাচ্ছেন না। চলতি বছরে বিভিন্ন সাপের কামড়ে মারাও গেছেন ৪-৫ জন। চিকিৎসকরা বলছেন সাপে কাটার পর ওঝার কাছে যাওয়ায় প্রাণহানি বাড়ছে। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুরে কাঁচিকাটায় ও বিভন্ন স্থানে রাসেল ভাইপার সাপের উপদ্রব বেড়েছে। এতে জাজিরা উপজেলাও সখিপুরসহ শরীয়তপুরের সব এলাকার মানুষের ভেতরে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। জনজীবন রয়েছে ঝুঁকির মধ্যে। এদিকে সাপ ধরার কাজে নিয়েজিত রয়েছেন স্থানীয় সাপুড়ে মিনু ঢালী (৬৫)। নিজের কলা কৌশলে সাপের গর্ত খুঁড়ে বের করে নিয়ে আসছেন সাপ। 

গেল বুধবার সখিপুরের মাদবর কান্দি এলাকায় ধরা পড়ে একটি রাসেল ভাইপার। স্থানীয়রা বলছেন, প্রতিবছর পানি এলেই বাড়ে সাপের উপদ্রব। বাসা বাড়িতে ধরা পড়ছে সাপের বাচ্চা। গত ১১ মে সখিপুর ইউনিয়নে বিষাক্ত সাপের কামড়ে সেলিম মাদবর (৫০) নামে এক ফার্নিচার ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। 

এদিকে শরীয়তপুরের জাজিরায় ফসলি জমি থেকে ‌কিলিং মেশিন খ্যাত ভয়ংকর বিষধর রাসেল ভাইপার সাপ উদ্ধার করেছে এলাকাবাসী।

মঙ্গলবার সকালে উপজেলার বিলাসপুর ইউনিয়নের পাচুখার কান্দি গ্রামের এমদাদুল হক নামে এক ব্যক্তির ফসলি জমিতে সাপটির দেখা মিলে। এ নিয়ে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। যদিও আতঙ্কিত হয়ে সাপটিকে তৎক্ষণাৎ পিটিয়ে মেরে ফেলেন লোকজন।

স্থানীয় বাসিন্দা এমদাদুল হক জানান, বিভিন্ন সময় ফেসবুকে রাসেল ভাইপার সাপ দেখেছি। এবার বাস্তবে ফসলি জমিতে এ সাপের দেখা মিলল। মঙ্গলবার সকালে গরুর জন্য আমার ফসলি জমিতে ঘাস কাটতে গিয়ে দেখি সাপটি জমিতে থাকা জালের বেড়ায় আটকে আছে। পরে সাপটির ছবি তুলে ইন্টারনেটের মাধ্যমে শনাক্ত করি যে জালে আটকে থাকা সাপটি বিষাক্ত রাসেল ভাইপার সাপ। সাপটি দেখে আমি আতঙ্কিত হয়ে পড়ি।

জানা গেছে, বাংলাদেশে বর্তমানে যেসব সাপ দেখা যায় সেগুলোর মধ্যে রাসেলস ভাইপার সবচেয়ে বিষাক্ত। এই সাপের কামড়ে শরীরের দংশিত অংশে বিষ ছড়িয়ে অঙ্গহানি, ক্রমাগত রক্তপাত, রক্ত জমাট বাঁধা, স্নায়ু বৈকল্য, চোখ ভারী হয়ে যাওয়া, পক্ষাঘাত ও কিডনির ক্ষতিসহ বিভিন্ন ধরনের শারীরিক উপসর্গ দেখা দেয়।

এ বিষয়ে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ড. কবীর আলম বলেন, রাসেলস ভাইপার সাপ লোকালয়ে সাধারণত খুব কমই দেখা যায়। বাচ্চা দেওয়ার কারণে হয়তো ওই সাপটি লোকালয়ে চলে এসেছে। তবে সবাইকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

ভেদরসঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও টিউসি ডাঃ সুমন কুমার পোদ্দার বলেন, হাসপাতালে রয়েছে পর্যাপ্ত এন্টিভেনম। তাই সাথে সাথে হাসপাতালে আনার পরামর্শ চিকিৎসকদের। 

শরীয়তপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একে এম এনামুল হক শামীম বলেন, গত কয়েক দিন যাবত সাপের উপদ্রব বেড়ে যাওয়া এবং বিষাক্ত সাপের কামড়ে দুজনের মৃত্যুর কারণে সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসার জন্য অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন সরবরাহ করা হয়েছে। 

বিভিন্ন হাসপাতালের তথ্যমতে সাপে কাটা রোগী ৩৭ জন যদিও স্থানীয়দের দাবি এর সংখ্যা আরোও বেশি।

 

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল



এই পাতার আরো খবর