যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে কমতে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে যমুনার পানি ৮ সে.মি. কমেছে। পানি কমলেও যমুনার অরক্ষিত অংশে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন ভাঙনে বসতভিটা ও ফসলি জমি হারিয়ে মানুষ নিঃস্ব হয়ে পড়ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ ভাঙন দেখা দিলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। এছাড়াও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় কৃষকের ফসলি ও শাক-সবজির ক্ষেত তলিয়ে গেছে। বসতভিটার চারপাশে পানি ও রাস্তা তলিয়ে যাওয়ায় চলাচলেও অসুবিধা হচ্ছে।
জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ হার্ডপয়েন্টে পানি সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১২ মিটার। গত ২৪ ঘণ্টায় ৮ সে.মি. কমে বিপদসীমার ৯০ সে.মি. নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিপদসীমা ১২.৯০ সে.মি.। পানি কমলেও ভাঙন বেড়েছে। শাহজাদপুর উপজেলার খুকনী, জালালপুর, আড়কান্দি, পাচিল, কাজিপুর উপজেলার চরাঞ্চল খাসরাজবাড়ী, সদর উপজেলার কাওয়াকোলার চরাঞ্চলে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত কয়েকদিনে বেশকয়েকটি বসতবাড়িসহ শতশত হেক্টর ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন কবলিতরা বসতবাড়ি ভেঙে নিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন অনেকেই।
জালালপুর গ্রামের আব্দুস সালাম জানান, সকাল থেকে নদী ভাঙছে। নদী আমার বাড়ির কোনায় চলে এসেছে। বাড়ির পাশে গাছপালা ছিল নদীতে চলে গেল। এলাকার মানুষ আতঙ্কিত। ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আমার বাড়িসহ আশপাশের বাড়িঘর কিছুই থাকবে না।
জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য মোছা. লাইলী বেগম বলেন, এবার বর্ষা শুরুর আগে থেকেই নদী ভাঙছে। যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। এখানে গুচ্ছ গ্রাম ছিল গত দুই বছরে ভাঙতে ভাঙতে পুরো গুচ্ছ গ্রাম এখন যমুনা নদীর পেটে। নদী ভাঙতে ভাঙতে আমার বাড়ির কাছে চলে এসেছে। যা অব্যাহক থাকলে আরও অনেক বসতভিটা নদীগর্ভে চলে যাবে।
কাওয়াকোলা ইউপি চেয়ারম্যান জিয়া মুন্সী জানান, কাওয়াকোলা ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গিয়ে ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। কিছু কিছু এলাকায় বসতবাড়ির চারপাশ ও রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় চলাচলেও অসুবিধা হচ্ছে। এছাড়াও বড় কয়রা ও ছোট কয়রা এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, গত কয়েকদিন পানি বাড়লেও গত ২৪ ঘণ্টায় পানি কমেছে। তিনি আরো জানান, আড়কান্দি, জালালপুরের যেসব পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিয়েছে সেসব এলাকায় জিওট্যাব ও জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে চরাঞ্চলের ভাঙনরোধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ বা প্রকল্প নেই।
বিডি-প্রতিদিন/শআ