ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

গাইবান্ধায় ভাঙন আতঙ্কে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে চরবাসী
গাইবান্ধা প্রতিনিধি
অনেক পরিবার তাদের বসতবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে

গাইবান্ধার তিস্তা, ঘাঘট, ব্রহ্মপুত্র ও করতোয়া নদ-নদীর পানি কমতে থাকায় জেলায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে। পানি কমতে শুরু করায় প্লাবিত নিম্নাঞ্চলগুলো জেগে উঠলেও তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র চরবাসীর মধ্যে ভাঙন আতঙ্ক রয়েছে। এসব চরের মানুষ তাদের ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে অন্যত্র। পানি কমলেও দুর্ভোগ কমেনি চরবাসীর।

গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের ঝানঝাইড় এলাকায় ২০টি ঘরবাড়ি এবং শতাধিক বিঘা ফসলি জমি এবং তিস্তা নদী তীরবর্তী সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের ৫০টি বসতবাড়ি এবং প্রায় ২৫০ বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন আতঙ্কে হাজারও পরিবার তাদের বসতবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে।

প্রতিবছর তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়া বা কমার সাথে সাথে নদী ভাঙন শুরু হয়। যার কারণে প্রতি বছর পাঁচ শতাধিক বসতবাড়ি এবং হাজারও একর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়।

কাপাসিয়া ইউনিয়নের ভাটির চর এলাকার বাবলু মিয়া বলেন, ইতিমধ্যে ২ বিঘা জমির পাটক্ষেত নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে এবং তার বসতবাড়িও বিলীন হওয়ার পথে। তিনি আরও জানান, ভাঙনের মুখে শতাধিক বসতবাড়ি ও পাঁচ শতাধিক বিঘা ফসলি জমি রয়েছে।

হরিপুর ইউনিয়নের লখিয়ার পাড়া এলাকার জাহিদুল ইসলাম বলেন, একজন চরবাসীকে মৌসুমে কমপক্ষে ৩ থেকে ৪ বার ঘরবাড়ি সরাতে হয়। কিন্তু আজও স্থায়ীভাবে নদী ভাঙন রোধের কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোজাহারুল ইসলাম বলেন, ইতিমধ্যে তার ইউনিয়নের ২০টি বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙনের মুখে এখনও হাজারও বসতবাড়ি রয়েছে এবং অনেকে তাদের বসতবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ওয়ালিফ মন্ডল জানান, পানি কমতে থাকায় উপজেলার বিভিন্ন চরে ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনে ৫০টির বেশি পরিবারের বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে এবং অনেকে ভাঙন আতঙ্কে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা পাঠানো হয়েছে এবং বরাদ্দ পেলে তা বিতরণ করা হবে।

সোমবার (২৪ জুন) বিকেল ৩টায় গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কন্ট্রোলরুম থেকে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় তিস্তার পানি ৯ সেমি হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার ৩৬ সেমি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া ঘাঘট নদীর পানি ১৯ সেমি হ্রাস পেয়ে ১৬৫ সেমি, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ২৩ সেমি হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার ১৩৭ সেমি ও করতোয়া নদীর পানি ২৮ সেমি হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার ১৪০ সেমি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এ বিষয়ে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক জানান, গাইবান্ধার সবগুলো নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে এবং ভাঙন রোধে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।

বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল



এই পাতার আরো খবর