ঢাকা, রবিবার, ৩০ জুন, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

যমুনায় পানি কমছে, বাড়ছে ভাঙন
আব্দুস সামাদ সায়েম, সিরাজগঞ্জ:

যমুনা নদীর পানি কমতে শুরু করলেও ভাঙন বেড়েছে। গত ১০ দিনের ব্যবধানে যমুনা অরক্ষিত ও চরাঞ্চলে ভাঙ্গনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতালসহ অন্তত ৫ শতাধিক বসতভিটা, শতশত বিঘা জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। তবে ভাঙন রোধে কয়েকটি পয়েন্টে পাউবো জিওব্যাগ ফেলে ব্যবস্থা গ্রহন করলেও চরাঞ্চলে কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করায় ভাঙ্গন কবলিতদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। 

ভাঙ্গনের কারনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে যমুনা তীরের বাসিন্দারা। ঘরবাড়ি সরিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে। আবার ঘর তোলার জায়গা না থাকায় স্তুপ করে রেখে অনেকে খোলা আকাশের নীচে বসবাস করছে। ফসলী জমি হারিয়ে নি:স্ব হয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় ভাঙ্গনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন ভাঙ্গন কবলিতরা। তবে পাউবো কর্মকর্তারা বলছেন, ডানতীরে ভাঙ্গনরোধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হলেও চরাঞ্চলে ভাঙ্গনরোধে ব্যবস্থা গ্রহনে প্রকল্প না থাকায় ব্যবস্থা গ্রহন করা সম্ভব হচ্ছে না। 

জানা যায়, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে ৫দিন যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও গত তিনদিন ধরে যমুনা নদীর পানি কমছে। পানি কমা ও বাড়ার সাথে সাথে চরাঞ্চলের সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়ন, কাজিপুর উপজেলার রাজবাড়ী, খাসরাজবাড়ী, চরমিয়াখোলা, যুক্তিগাছা, যমুনার ডানতীরের শাহজাদপুর উপজেলাল জালালপুর, কৈজুরী, আড়কান্দি ও পাঁচিলে ব্যাপক ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। গত ১০ দিনের ব্যবধানে ভাঙ্গনে প্রায় ৫শ বসতভিটা, মসজিদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ফসলীজমি বহুস্থাপনা বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে হাজার হাজার বসতভিটা ও ফসলীজমি অসংখ্য স্থাপনা। ভাঙ্গন কবলিতরা বলছে, ভাঙ্গনে কারনে বসতভিটা অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। জায়গা না থাকায় স্তুপ করে রাখা হচ্ছে। দ্রæত ভাঙ্গনরোধে ব্যবস্থা নেয়া না হলে বহু স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীণ হয়ে হাজার হাজার মানুষ নি:স্ব হয়ে পড়ে যাবে। খাসরাজবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা মাহবুব, ঘুটু ও ওসমান জানান, দশ দিন যাবত খাসরাজবাড়ী গ্রামে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনের কবলে পড়ে নিজেদের বসতভিটাসহ ফসলি জমিটুকুও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখন কোথায় গিয়ে দাঁড়াবো, কিভাবে সংসার চালাবো সেই দুশ্চিন্তায় ভুগছি।। চর মিয়াকোলা গ্রামের শাহাদাত হোসেন ও বেলাল হোসেন জানান, ব্যাপকহারে নদী ভাঙন অব্যাহত থাকলেও এখন পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন কর্মকর্তা দেখতেও আসেনি। এমনভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে কাজিপুর উপজেলার মানচিত্র থেকে খাসরাজবাড়ী ইউনিয়ন হারিয়ে যাবে। হাসপাতাল, বিদ্যুতের খুটি, বসতভিটা ও ফসলী জমি সবকিছু বিলীন হয়ে মানুষ নি:স্ব হয়ে পড়ছে। 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, বরাবরের মতোই আশ্বাস দিয়ে বলছেন, পানি-কমা বাড়ায় যমুনার ডান তীরে ভাঙন শুরু হওয়ায় জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে চরাঞ্চলের ভাঙ্গনরোধে কোন প্রকল্প নেই। চরাঞ্চল ভাঙ্গনরোধে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত জানানো হয়েছে। জরুরি প্রকল্প গ্রহন করা হলে ভাঙ্গনরোধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। 

বিডি প্রতিদিন/এএম



এই পাতার আরো খবর