ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজারে ২০ দিন ধরে পানির নিচে সরকারি অফিস-হাসপাতাল
সৈয়দ বয়তুল আলী, মৌলভীবাজার

ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে প্রায় ২০ দিন ধরে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানিবন্দী লক্ষাধিক পরিবার। পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে উপজেলা পরিষদসহ বিভিন্ন সরকারি অফিস। ঢলের স্রোতে ভেঙেছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট।

বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিন পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলা কৃষি অফিস, নির্বাচন অফিস, মহিল বিষয়ক অফিস, সাব-রেজিস্টার, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, সমবায়, জনস্বাস্থ্য এবং পল্লী উন্নয়নসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়স্থ পুরো ভবন পানিবন্দী। এখানকার আবাসিক এলাকার রাস্তায়ও হাঁটু সমান পানি। কেউ কোনো যানবাহন নিয়ে চলাচল করতে পারছে না। কর্মকর্তারা ঠিকমতো কাজ করতে না পারায় মানুষেরও ভিড় নেই।

এছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণসহ আশপাশের আবাসিক এলাকা নিমজ্জিত থাকায় স্বাস্থ্যসেবা প্রদান ও সরকারি দাপ্তরিক কার্যক্রমে চরম ব্যাঘাত ঘটছে। পানিবন্দী থেকে চিকিৎসা সেবা ও উপজেলা প্রশাসনিক কাজকর্ম করছেন বিভিন্ন দাপ্তরিক কর্মকর্তা ও চিকিৎসকরা। এতে সরকারি অফিস ও হাসপাতালের সেবাগ্রহীতাদের চরম ভোগান্তি হচ্ছে। 

এদিকে, হাসপাতালের সেবাগ্রহীতা ও চিকিৎসকদের কথা চিন্তা করে গত ২৫ জুন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রবেশমুখে যাতায়াতের সুবিধার্থে একটি ভাসমান অস্থায়ী সেতু তৈরি করেন ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান আখই, ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন সুমন ও আব্দুল কাইয়ুম।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ২০ দিন ধরে উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও ১ পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের ঘর-বাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সড়কপথ পানির নিচে ডুবে আছে। প্রায় লক্ষাধিক মানুষ বন্যাক্রান্ত। বন্যার্তদের জন্য ২৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এতে আড়াইহাজারের মতো মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেন, আমাদেরতো অফিসে আসতে হবে। বৃষ্টির পানি মাড়িয়ে ঘর থেকে বের হওয়া, আবার জমে থাকা পানি দিয়ে হেঁটে হেঁটে অফিসে ঢুকা অত্যন্ত কষ্টকর।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শিমুল আলী বলেন, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানানোর জন্য জনপ্রতিনিধিদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতিদিন ত্রাণ ও খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন বলেন, বন্যার শুরু থেকে উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি ব্যক্তি উদ্যোগেও অনেকেই ত্রাণসামগ্রী নিয়ে বন্যার্তদের পাশে রয়েছেন। বন্যার মাঝে প্রশাসনিক কাজ অব্যাহত আছে। বন্যা মোকাবেলায় প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে বলেও তিনি জানান।

মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল বলেন, বন্যা থেকে বাঁচতে হলে নদী, হাওর ও খাল খনন করতে হবে। পানি নামার জন্য মধ্যখানে যে সকল প্রতিবন্ধকতা রয়েছে সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে তা অপসারণ করা জরুরি।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত



এই পাতার আরো খবর