ঢাকা, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

পর্যাপ্ত মজুদ সত্ত্বেও পাবনায় অস্থির পিঁয়াজের বাজার
পাবনা প্রতিনিধি

লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদনের পরেও পাবনায় অস্থির পিঁয়াজের বাজার। দেশের অন্যতম পিঁয়াজ উৎপাদনকারী এ জেলায় প্রতি কেজি পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। এমন দামকে অস্বাভাবিক বলছেন, পাইকারী বিক্রেতারাও। 

বিক্রেতারা জানান, উচ্চ শুল্কের কারণে সম্প্রতী বিদেশ থেকে পিঁয়াজ আমদানি কমেছে। এই খবরে, পর্যাপ্ত মজুদ থাকা সত্ত্বেও হাটে বাজারে পিঁয়াজ কম আনছেন মজুতদারেরা। ফলে বাজারে সরবরাহ ঘাটতি অজুহাতে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে পিঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে, পিঁয়াজ আমদানিতে উচ্চ শুল্ক প্রত্যাহার ও মজুতদারদের পিঁয়াজের গুদাম মনিটরিংয়ের পরামর্শ প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের।

রবিবার পাবনার বড় বাজার পিঁয়াজের আড়ৎ ঘুরে দেখা যায়, মানভেদে পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। কিছুটা নিম্নমানের আংশিক পচা পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়।

বড় বাজারের পিঁয়াজের আড়ৎদার আব্দুল মকুল জানান, সুজানগর সাঁথিয়ায় বড় বড় সব কৃষকের চাতালেই পর্যাপ্ত পিঁয়াজ আছে। কিন্তু আমদানি করা পিঁয়াজ বাজারে না থাকায় তারা অল্প অল্প করে পিঁয়াজ হাটে আনছেন। ফলে সরবরাহ কমে যাওয়ায় পিঁয়াজের দাম বাড়ছে। প্রান্তিক কৃষকের হাতে পিঁয়াজ নেই, বড় কৃষকরা সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের সাথে যোগসাজশ করে সুযোগ নিচ্ছেন।

পিঁয়াজ ব্যবসায়ী ফরিদ হোসেন বলেন, দেশের উৎপাদন হওয়া পিঁয়াজে সারা বছর চলবে না এটা বড় ব্যবসায়ী, মজুতদাররা জানে। উচ্চ শুল্কের কারণে আমদানি কারকেরা পিঁয়াজ আনছেন না। এতে দেশের পিঁয়াজের উপর চাপ পড়ায় দাম বেড়েছে। কয়েকদিনের ব্যবধানে ২২০০ টাকা মণের পিঁয়াজ ৩৮০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি এড়িয়ে পিঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক রাখতে আমদানির কোন বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে সরকার শুল্ক প্রত্যাহারের বিষয়টি ভেবে দেখতে পারে। নয়তো পিঁয়াজের বাজার ক্রমেই উর্ধ্বমুখী হবে।

পাবনা হাজিরহাটের ব্যবসায়ী কামাল হোসেন বলেন, বৃষ্টির কারণে হাটে পিঁয়াজের আমদানি কম। এর পাশাপাশি মোবাইল ফোনে ঢাকার সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা হাটে পিঁয়াজের দাম নির্ধারণ করে দেয়। ফলে, স্থানীয় কৃষক বা আড়ৎদারদের কিছুই করার থাকে না। প্রশাসনিক নজরদারি বাজারে নয় মজুতদারদের গুদামে করা প্রয়োজন। পাশাপাশি পর্যাপ্ত আমদানি থাকলেও মজুতদারেরা উৎসাহ হারাবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. জামাল উদ্দিন বলেন, চলতি মৌসুমে পাবনায় ৭ লাখ ৭৮ হাজার মেট্রিকটন পিঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৮ হাজার মেট্রিক টন বেশি। মাত্র কিছুদিন আগেই উত্তোলন মৌসুম শেষ হয়েছে। পিঁয়াজের কোন সংকট নেই। 

পাবনার সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা শামসুর রহমান বলেন, এখন পিঁয়াজের সরবরাহ পর্যাপ্ত নয়। কৃষকদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে পিঁয়াজ মজুদ থাকলেও তারা অল্প পরিমাণে বিক্রি করছেন, ফলে দাম বেড়েছে।

 

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল



এই পাতার আরো খবর