ঢাকা, বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

যমুনার পানি কমছে ধীর গতিতে, দুর্ভোগ চরমে
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:

যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মাত্র ৪ সে.মি. কমে বিপৎসীমার ৪৬ সে. মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে এখনো জেলার সদর, কাজিপুর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলার ৩৪টি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। 

প্রায় ১৫ দিন যাবত পানিবন্দি অবস্থায় থাকায় বানভাসীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। কর্ম না থাকায় আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছে। কোনো কোনো বাড়িতে রান্নার চুলা জ্বলছে না। চিড়া মুড়ি খেয়ে দিনযাপন করছেন অনেকে। হাতে ঘাসহ পানিবাহিত রোগ দেখা দিয়েছে। গবাদি পশুর খাদ্য সংকটের পাশাপাশি গবাদিপশুগুলোও পানিতে থাকায় তাদের পায়ে পচন ধরছে। নারীরা স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিয়ে চরম সমস্যায় ভুগছেন। 

টিউবওয়েল না থাকায় বিশুদ্ধ পানির সংকটও চরমে। এছাড়া যারা বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে তারাও নানা সমস্যায় দিনযাপন করছে। ফসলের ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় যেমন কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তেমনি কাজ না থাকায় কৃষি শ্রমিকরাও বিপাকে পড়েছেন। বন্যায় সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমির পাট, আউশ, কলাসহ শাকসবজি তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। চলাচলের একমাত্র ভরসা নৌকা অনেকের নেই। তাই অনেকে ঘর থেকে বের হতেও পারছে না। কষ্টে থাকলেও অনেক বন্যা কবলিত এলাকায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা খোঁজ খবব নেয়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে বানবাসীদের। তবে সরকারীভাবে কিছু কিছু এলাকায় মাত্র ১০ কেজি করে চাল সহায়তা দেয়া হলে অধিকাংশ বানভাসী মানুস বঞ্চিত রয়েছে। অন্যদিকে যমুনার অরক্ষিত অঞ্চল কাজিপুরের খাসরাজবাড়ী, সদরের কাওয়াকোলা, চৌহালীর ভুতের মোড় ও শাহজাদপুরের পাঁচিলে প্রতিদিন ভাঙ্গনে বসতভিটা ও ফসলি জমি বিলীন হচ্ছে। 

মঙ্গলবার দুপুরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাজশাহী বিভাগীয় অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান, সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহববুবুর রহমানসহ বিভিন্ন কর্মকর্তারা কাজিপুরের মেঘাই স্পারবাধ থেকে সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষাবাধ পর্যন্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। 

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান জানান, ৫টি উপজেলায় এ পর্যন্ত ১০৩ মে. টন চাল ও ৩ শত প্যাকেট শুকনো খাবার ও নগদ ৫ লক্ষ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।  

পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাজশাহী বিভাগীয় অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান পরিদর্শন শেষে বলেন, যমুনা নদীর পানি এখনও বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষন করছে। যে সকল এলাকায় ভাঙন দেখা দিচ্ছে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। এছাড়াও চৌহালী ও এনায়েতপুরে পাচিলে যে ভাঙন দেখা দিয়েছে সে সকল স্থানে জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলে ভাঙন প্রতিরোধ করা চেষ্টা করা হচ্ছে।   

বিডি প্রতিদিন/হিমেল



এই পাতার আরো খবর