ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

কোটা সংস্কারের দাবিতে জাবিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ, শিক্ষকদের সংহতি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকও অংশ নেন। 

রবিবার বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন' এর ব্যানারে এ বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের কয়েকজন শিক্ষক দেশে চলমান বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে সংহতি জানান। 

এসময়, বায়োটেকনলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান লাবীব বলেন, বর্তমানে আমাদের একদফা দাবি শুধু কোটা সংস্কার করে মেধাবীদের চাকরিতে সুযোগ দেওয়া৷ সরকারকে বলবো কোটা সংস্কার না করে হামলা-মামলা দিয়ে আমাদের রাজপথ থেকে ওঠানোর কোনো পায়তারা করবেন না। অন্যথায়, আমরা আন্দোলন আরো বেগবান করবো৷

বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী আব্দুর রশিদ বলেন, আমাদের যৌক্তিক আন্দোলন চলাকালে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ হামলা চালিয়েছে, মামলা দিয়েছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পাশাপাশি যারা এই ন্যক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। অতিদ্রুত কোটা সংস্কার না করা হলে আরো কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, দেশ ও জাতির মঙ্গলের জন্য শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনে আমি সংহতি জানাচ্ছি। একটি দক্ষ শিক্ষাব্যবস্থা চালু রাখতে গেলে মেধাবীদের দরকার, কর্মক্ষেত্রে যদি মেধাবীরা বঞ্চিত হয়, তাহলে তা দক্ষ জনশক্তির পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে৷ আমরা প্রত্যশা করি নির্বাহী বিভাগ আমাদের কথা শুনবে, সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে যৌক্তিক কোটা সংস্কার করবে। তাহলে শিক্ষার্থীরাও পড়ার টেবিলে ফিরে যাবে৷

ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ গোলাম রব্বানী বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দেখে মনে হচ্ছে, তারা ৫২'র ভাষা আন্দোলন ও ৬৯'র গণভ্যত্থানের উত্তরসূরী। কোটার উদ্দেশ্য বৈষম্য সৃষ্টি করা নয়। বরং বৈষম্য নির্মূল করা৷ কিন্তু এখন কোটার মাধ্যমে এক ধরনের বৈষম্য সৃষ্টি হচ্ছে৷ তার চেয়ে বড় কথা কোটার মধ্য দিয়ে পুরো দেশকে মেধাশূন্য করা হচ্ছে৷ সুতরাং শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুধুমাত্র চাকরির আন্দোলন নয়, দেশ রক্ষার আন্দোলন৷

দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে যে বৈষম্য তৈরি করার পায়তারা করছেন, তা বন্ধ করুন। মেধাভিত্তিক, দুর্নীতিমুক্ত ও বৈষম্যমুক্ত একটি সুন্দর বাংলাদেশ তৈরি করার জন্য শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে। আমরা শিক্ষার্থীদের এই যৌক্তিক আন্দোলনে সমর্থন জানাচ্ছি। দ্রুত শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়ন করা হোক।

এসময়, বক্তারা সারাদেশে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও মামলা দায়েরের প্রতিবাদও জানান।



এই পাতার আরো খবর