স্বাধীনতার পর দিনাজপুরের জোত সাতনালা ও দক্ষিণ আলোকডিহি গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে চলা ইছামতি নদীর উপর ফেকু বানিয়ার ঘাটে আজও সেতু নির্মাণ করা হয়নি। বার বার আশ্বাস দিলেও কিছুই হয়নি। তাই কিছুটা দুর্ভোগ কমাতে চলাচলে স্থানীয়ভাবে করা হয় বাঁশের সাঁকো। ওই ঘাটে বার বার বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় স্থানীয়ভাবে এবার চরম দুর্ভোগ লাঘবে কাঠের সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছে। দুই গ্রামের হাজার হাজার মানুষ কাঠের সাঁকোর উপর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। এলাকাবাসী এ নদীর উপর সেতু নির্মাণে জনপ্রতিনিধিদের নিকট জোর দাবি জানান।
চলাচলকারীরা জানায়, চিরিরবন্দরের সাতনালা ইউপির জোত সাতনালা ও আলোকডিহি ইউপির দক্ষিণ আলোকডিহি গ্রামের মাঝে ফেকু বানিয়ার ঘাটে ইছামতি নদীর উপর এবছর বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় ২০০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি কাঠের সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছে। সরকারিভাবে সেতু নির্মাণ না হওয়ায় চিরিরবন্দর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সুনীল কুমার সাহার উদ্যোগে এবং এলাকাবাসীর সার্বিক সহযোগিতায় ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি কাঠের সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছে।
লোকজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ কাঠের সাঁকোর ওপর দিয়েই চলাচল করছেন। আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষের এ কাঠের সাঁকোই এখন যাতায়াতের একমাত্র ভরসা। তাদের দাবি ৫২ বছরেও পূরণ হয়নি। দীর্ঘদিনেও এখানে সেতু নির্মাণ না হওয়ায় প্রতিদিন এলাকার শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, কৃষক, চাকরিজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে। নদীর দুই পাড়ে চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে।
জোত সাতনালা গ্রামের বানিয়াপাড়ার কৃষক ফেরদৌস আলী, বৃদ্ধ ফয়েজউদ্দিন ফয়েজ, পন্ডিতপাড়ার আইনুল হক জানান, আমরা তো অবহেলিত। ভোটের সময় অনেকেই সেতু নির্মাণের আশ্বাস দেন। কিন্তু ভোট চলে গেলেই সেতু নির্মাণের কথা ভুলে যান।
আলোকডিহি ইউপির দক্ষিণ আলোকডিহি গ্রামের কিষ্টটহরির কৃষক আব্দুস সালাম জানান, আমার বাপ-দাদারাও এ ঘাটে বাঁশের সাঁকো দিয়েই নদীর দুই পাড়ে যাতায়াত করেছেন। পরে এলাকাবাসীর উদ্যোগে এবছর কাঠের সাঁকো নির্মাণ করা হয়। তবে সেতু নির্মাণ করা হলে মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হতো।
চিরিরবন্দর উপজেলার সাতনালা ইউপি চেয়ারম্যান মো. এনামুল হক শাহ্ ভোগান্তির কথা স্বীকার করে বলেন, সাঁকোটির দুই পাশে স্কুল ও মাদরাসা রয়েছে। প্রতিদিন শিক্ষার্থীসহ শত শত মানুষ এই সাঁকোর উপর দিয়ে যাতায়াত করেন। ভুক্তভোগী মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে সেতু নির্মাণে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে, এমনটাই প্রত্যাশা করছি।
চিরিরবন্দর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সুনীল কুমার সাহা বলেন, আমি এলাকার জনগণের দুঃখ-দুর্দশা ও কষ্টের কথা চিন্তা করে ব্যক্তিগতভাবে এবং এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ওই স্থানে বাঁশের সাঁকোর পরিবর্তে কাঠের সাঁকো নির্মাণ করে দিয়েছি।
বিডি প্রতিদিন/এমআই