ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

আবু সাঈদ প্রাণ দিয়ে প্রমাণ করেছেন যুগে যুগে বিপ্লব-আন্দোলনের উর্বর ভূমি রংপুর
নজরুল মৃধা, রংপুর

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে প্রাণ দিয়ে প্রমাণ করেছেন যুগে যুগে বিপ্লব আন্দোলনের উর্বর ভূমি এই রংপুর। স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরুর আগে ১৯৭১ সলের ৩ মার্চ রংপুর থেকে প্রথম শহিদ হন ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী শংকু সমাজদার, ৭১ এর ২৮ মার্চ রংপুরের মানুষ লাঠিসোটা নিয়ে ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও করে শত শত মানুষ প্রাণ দিয়েছেন। নুরুলদিন জংয়ে বাকের, দেবী চৌধুরাণী, ওয়ালিদাদ মাহামুদ, লালবিবিসহ অনেকেই ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে শহীদ হন। তারা সবাই রংপুরের মানুষ। আান্দোলনের জন্য তারা অকাতরে প্রাণ দিতে পারেন। এদের নাম ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে।

সর্বশেষ ২০২৪ সালের নতুন স্বাধীনতা আন্দোলনে প্রাণ দিয়ে  ইতিহাস সৃ্িষ্ট করেছেন আবু সাঈদ। আবু সাঈদ প্রমাণ করেছেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রাণ দিতে রংপুরের মানুষ পিছু পা হন না। নিহত আবু সাঈদ রংপুরের পীরগঞ্জের বাববনপাড়া গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে। আর্থিক অবস্থা ভাল না থাকায় প্রাইভেট পড়িয়ে যেকয় টাকা পেতেন তাই দিয়ে আবুু সাঈদের পরিবারের  চলত।  বৃদ্ধ বাবা মকবুল হোসেন বলেন, আমার কলিজার টুকরা ছিলো আবু সাঈদ। তার প্রাইভেট পড়ানোর (টিউশনের) জমানো টাকায় চলতাম আমরা। সন্তান হারিয়েছি, এ শোকের কোন সান্ত্বনা নেই। পিতা হয়ে সবচেয়ে ভারি কাজ হলো সন্তানের লাশ কাঁধে নেয়া। আল্লাহর কাছে এখন শুধু সবার কাছে সন্তাানের জন্য দোয়া চান বৃদ্ধ এ বাবা। আর এই হত্যার বিচার চাই।

আবু সাঈদের বড় ভাই আবু হোসেন বলেন, আমার ভাই দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন। তার এই আত্মহ্যাগ যেন বৃথা না যায। এজন্য তিনি দেশবাসির প্রতি আহবান জানান।    গত ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২তম ব্যাচের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাইদ। এরপর থেকেই নতুন মাত্রা পায় কোটাবিরোধী আন্দোলন। আবু সাঈদ শহিদ হওয়ার পরে অনেকে তার বাড়িতে গিয়েছেন। কবর জিয়ারত করেছেন। যারা আবু সাইদের বাড়িতে গিয়ে পরিবারকে সান্ত্বনা দিয়েছেন তাদের মধ্যে উল্লখযোগ্য হলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, কোটা আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কসহ অনেকেই। 

ইতিহাসের পাতা ঘাটলে দেখা যায়, ১৭৩০ সালে রংপুরের বুকে নূরলদীন আন্দোলন করে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ভিত নড়িয়ে দিয়েছিলেন। ফকির সন্ন্যাসী আন্দোলন দেবী চৌধুরানীসহ অনেকেই প্রাণ দিয়েছিলেন রংপুরে। নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন এই রংপুরের মেয়ে।  

বিডি প্রতিদিন/এএ



এই পাতার আরো খবর