ঢাকা, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

নগরকান্দায় বিএনপির দুই গ্রপের সংঘর্ষে প্রাণগেল একজনের
ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি

ফরিদপুরের নগরকান্দায় কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলের আগমনকে কেন্দ্র করে আজ বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিএনপির দুই গ্রুপের মাঝে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে কবির ভুইয়া (৫৫) নামের একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছে উভয় পক্ষের কমপক্ষে অর্ধশতাধিক ব্যক্তি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল তার নিজ নির্বাচনী এলাকা ফরিদপুর-২ আসনের নগরকান্দা-সালথায় শো-ডাউন ও পথসভার আয়োজন করে। শহিদুল ইসলাম বাবুলের আগমনকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে বিএনপির দুইটি গ্রুপের মাঝে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। রাতে শহিদুল ইসলাম বাবুলের কয়েকটি তোরন ভাংচুর করে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম রিংকুর সমর্থকেরা। এ নিয়ে মঙ্গলবার রাত থেকেই দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।    বুধবার সকালে নগরকান্দা-সালথা উপজেলায় শহিদুল ইসলাম বাবুলের শো-ডাউন করার কথা ছিল। সকালে বাবুলের কয়েকশ সমর্থকরা নগরকান্দার প্রবেশদ্বার ছাগলদি এলাকার পেট্রোল পাম্পে পাশে অবস্থান নেয়। অপরদিকে বাবুলকে প্রতিরোধ করতে শামা ওবায়েদের নেতাকর্মীরা জুঙ্গুরদী বাস স্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থান নিয়ে পাল্টাপাল্টি স্লোগান দিতে থাকে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শামা ওবায়েদ গ্রুপের লোকজন বাবুলের সমর্থকদের উপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। হামলায় বাবুলের সমর্থক কবির ভুইয়াকে ধারালো অস্ত্রদিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে লাশটি রাস্তায় ফেলে রাখা হয়।  এসময় উভয় গ্রুপের মাঝে দফায় দফায় সংঘর্ষে ছাগলদি, জঙ্গুরদী বাস স্ট্যান্ড এলাকাজুড়ে রনক্ষেত্রে পরিনত হয়। দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের কমপক্ষে অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়। 

আহতদের নগরকান্দা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে নগরকান্দা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করায় বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। 

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নগরকান্দা-সালথা সার্কেল) আসাদুজ্জামান সাকিল বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় এখনো কোন মামলা হয়নি।

এদিকে, বেলা ১টার দিকে ঢাকা থেকে সড়ক পথে নগরকান্দায় আসার পথে শহিদুল ইসলাম বাবুলের গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ভবুকদিয়া নামক স্থানে এ হামলায় বহরের বেশ কয়েকটি প্রাইভেটকার, পিকআপ, মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। পিটিয়ে আহত করা হয় কয়েকজনকে।  

বেলা দেড়টার দিকে শহিদুল ইসলাম বাবুল তার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে তালমা মোড় এলাকায় পথসভা করেন। পরে সংঘর্ষে নিহত ও আহতদের দেখতে ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতালে যান তিনি। এসময় শহিদুল ইসলাম বাবুল বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম রিংকুকে দায়ী করে বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীদের উপর বর্বর হামলা চালিয়ে একজনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা ও অর্ধশতাধিক ব্যক্তিকে আহত করা হয়েছে। শামা ওবায়েদের ইন্ধনে তার কর্মী-সমর্থকেরা এ ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে।   

অন্যদিকে শামা ওবায়েদ বলেন, বর্তমান সময় উৎসবের সময় নয়। এসময় গেট বানিয়ে বহিরাগতদের নিয়ে মহড়া দেওয়ার সুযোগ নেই। যারা দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে নির্যাতন-নিষ্পেষণের শিকার হয়েছে, নগরকান্দার বিভিন্ন গ্রামের লোকজন, তারা এ বিষয়টি ভালো চোখে দেখেনি। এ কারণে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। 

তিনি আরও বলেন, আমি শুনেছি, এ ঘটনায় একজন নিহত হয়েছে। এ মৃত্যুর ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এ বিষয়টি আমি অবশ্যই দেখব। তবে আমাদের দলের নির্দেশ আছে, বহিরাগত কাউকে দলে নেওয়া যাবে না। সে ক্ষেত্রে আমরা যেন এসব না করি।

বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ



এই পাতার আরো খবর