ঢাকা, শনিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

দুর্গম গ্রামের দুর্গতদের জন্য ভালোবাসা
কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক। সড়কের কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার কৃষ্ণপুর ব্রিজ। ব্রিজ থেকে পশ্চিমে নামলেই সড়কে হাঁটু পানি। হেঁটে চলেছেন ৫০ ও ৬০ এর বেশি বয়সী বন্ধুদের একটি দল। তাদের সাথে অভিজ্ঞ ৬ জন চিকিৎসক। যাচ্ছেন পানিবন্দি মানুষকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা ও ওষুধ প্রদান করতে। প্রায় দুই কিলোমিটার পথ কখনও হেঁটে কখনও নৌকায় পৌঁছালেন কুমিল্লা লাকসাম উপজেলার মনপাল মোল্লা বাড়ি। পুরো গ্রামে পানি, বাড়িটি যেন ছোট্ট দ্বীপ। বাড়ির ঘাটে রোগীদের একাধিক নৌকা। যেন কোন ছোট্ট নদী বন্দর। নৌকা থেকে নেমে যত্ন দিয়ে রোগী দেখা শুরু করেন চিকিৎসকরা। খোলা আকাশের নিচে হাঁসফাঁস গরম। সব মিলিয়ে ৬০০জন রোগীকে সেবা দেয়া হয়। মনপাল গ্রামে বন্ধু ফোরাম কুমিল্লা এই আয়োজন করে।

কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রোকসানা আক্তার, ডা. মো. নিজাম উদ্দিন, ডা. নুসরাত জাহান, ডা. মাসুদুর রসিদ সৈকত, ডা. মিয়া মো. নাদিম ও ডা. মাধবী সরকার এ সেবা দেন। টানা পরিশ্রমে সেবার আনন্দ তাদের কোন ক্লান্তি ছুঁতে পারেনি। 

সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন বন্ধু ফোরাম কুমিল্লার আহ্বায়ক কাজী ফখরুল আলম, যুগ্ম- আহ্বায়ক এ জে ড এম আফজাল জুয়েল, সদস্য এফ এ এম শাহরিয়ার, কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মাসুক আলতাফ চৌধুরী, ফোরামের সদস্য শারমিন সুলতানা দীপ্তি, মো. মাহফুজুর রহমান, স্বেচ্ছাসেবক নুর মিয়া মোল্লা ও অহিদুল ইসলাম।

সহযোগী অধ্যাপক ডা. রোকসানা আক্তার বলেন, দুর্গম এলাকার মানুষ গুলোকে সেবা দিতে পেরে আমরা আনন্দিত। এসব এলাকায় এরকম আরো মেডিক্যাল টিম আসা প্রয়োজন। আমি মনে করি সব পেশার মানুষদের দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত।

শারমিন সুলতানা দীপ্তি বলেন, আমরা এখানে এসে দেখলাম অধিকাংশ রোগীর পায়ের পাতা ও আঙুলে ঘা হয়ে আছে। সাথে আছে চুলকানি। বয়স্কদের প্রেশারের সমস্যা আছে। এই প্রান্তিক এলাকায় এসে মানুষকে সেবা দিতে পেরে ভালো লাগছে।

কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মাসুক আলতাফ চৌধুরী বলেন, এখানে ৬ জন চিকিৎসক সেবা দিয়েছেন। রোগীদের বিনামূল্যে ওষুধও দিয়েছেন। বন্ধু ফোরামের এই উদ্যোগের জন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই। 

বন্ধু ফোরাম কুমিল্লার আহ্বায়ক কাজী ফখরুল আলম বলেন, আমরা অনলাইন মাধ্যমে জানতে পারি এই এলাকার মানুষ কোন চিকিৎসা সেবা পাননি। দুর্গম এলাকা হওয়ায় কেউ আসতে চান না। তাই আমরা এখানে আসার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। এখানে এসে অনেক রোগী পাই। সেবা দেয়ার সুযোগ পেয়ে আমরা অনেক আনন্দিত। 

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন



এই পাতার আরো খবর